নিজস্ব প্রতিনিধি – ইতালি সর্বশেষ ইউরো জিতেছিল ১৯৬৮ সালে। এরপর দুটি বিশ্বকাপ জিতলেও আর মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট জেতার স্বাদ পায়নি দেশটি। বহুদিন পর সে আশা আবার জেগে উঠেছে। সেটাও সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ফুটবল উপহার দিয়ে। অধিকাংশ বড় দল যখন সাবধানী ফুটবল খেলেছে, সেখানে ইতালি উপহার দিয়েছে আনন্দদায়ী ফুটবল। গতকাল বেলজিয়ামের বিপক্ষে দারুণ এক ম্যাচ উপহার দিয়েছে রবার্তো মানচিনির দল। দুর্দান্ত দুটি গোল করে এগিয়ে যাওয়া দলটি রেফারির কিছুটা বিতর্ক জন্ম দেওয়া এক পেনাল্টির সিদ্ধান্তে ধাক্কা খেয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনের মুহূর্তে নিজেদের পরিচিত রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে সে ঝাপটা সামলে নেয় ইতালি। এই ইতালি ইউরো জিততেই এসেছে। অন্তত সাবেক জার্মান ফুটবলার ও কোচ ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমানের তেমনটাই মনে হচ্ছে। গতকাল ম্যাচে অবশ্য একটি ধাক্কা খেয়েছে ইতালি। এ টুর্নামেন্টে তাদের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন লেফটব্যাক হিসেবে খেলা লিওনার্দো স্পিনাৎসোলা। গতকাল চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন এই খেলোয়াড়। শুধু ইউরো নয়, ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যমের কথা সত্যি হয়ে থাকলে প্রায় এক বছরের জন্য বাইরে থাকতে হতে পারে তাঁকে। এ ধাক্কার পরও ইতালির ভালো সম্ভাবনাই দেখা ক্লিন্সমান বিবিসি ওয়ানে বলেছেন, ‘ইউরোর প্রথম দিন থেকেই ইতালি নিজেদের জানান দিয়েছে এবং তারা যে এবার ইউরো জেতার জন্য প্রস্তুত, এটা তারই সংকেত।’ দুর্দান্ত ফর্মে আছে ইতালি। নিজেদের ইতিহাসে অপরাজিত থাকার ৮০ বছরেরও বেশি পুরোনো রেকর্ড এই ইউরোতে এসেই ভেঙেছে। গতকালের পর এ নিয়ে টানা ৩২ ম্যাচ অপরাজিত রইল ইতালি। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে অপরাজিত আছে মানে এই নয় যে নেতিবাচক ফুটবল খেলছে তারা। বরং সাবেক ম্যানচেস্টার সিটি কোচের অধীনে ইতালি দুর্দান্ত খেলছে। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা দলটি টানা ১৩ ম্যাচ জিতেছে। এই সময়ে গোল হজম করেছে মাত্র দুটি! সাবেক ইংলিশ ফুটবলার ক্রিস সাটন তাই মানতে বাধ্য হচ্ছেন, ইতালি এখন ফেবারিটের তালিকায়। বিবিসি ফাইভকে বলেছেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরুতে সবাই যখন ওদের দারুণ ফর্মের কথা বলছিল, তখন আমি খুব একটা পাত্তা দিইনি। কারণ, ওরা খুব বড় দলকে হারায়নি তখনো। ভেবেছিলাম, আগে বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলুক, তখন দেখা যাবে। আমরা এখন সেটা দেখেছি।’ ইতালিয়ান কোচ মানচিনি সহজ ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, কেন তাঁরা এবারের টুর্নামেন্ট জেতার অন্যতম দাবিদার, ‘এ জয় আমাদের প্রাপ্য। আমার খেলোয়াড়েরা অসাধারণ। শেষ ১০ মিনিটে অনেক কষ্ট হয়েছে কারণ, সবাই ক্লান্ত ছিলাম। হয়তো আমরা আরও বেশি গোল করতে পারতাম। আমাদের পথ বেশ দীর্ঘ। এখনো দুই ম্যাচ বাকি। আপাতত এই জয় উপভোগ করি, পরে দেখা যাবে (ইউরো জিতবেন কি না)। খুব ভালো করেছে ছেলেরা, ওদের অভিনন্দন।