নিজস্ব প্রতিনিধি – টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ফাইনালের আগে ১০ ক্রিকেটারকে হল অব ফেমে স্থান দিয়েছে আইসিসি। ১৮৯৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের আগস্টে অবসর নেওয়া ক্রিকেটারদের নিয়ে এ তালিকা প্রস্তুত করেছে আইসিসি। অর্থাৎ তালিকায় নাম এসেছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার খেলোয়াড়দেরও। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হল অব ফেম প্রকাশ করে আইসিসি। যেখানে জিম্বাবুয়ের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার।

একনজরে হল অব ফেমে স্থান পাওয়া ১০ ক্রিকেটার—

অব্রি ফকনার: আইসিসির টেস্ট ব্যাটসম্যান ও বোলার দুটিরই র্যাংকিংয়ের চূড়ায় ওঠা একমাত্র ক্রিকেটার অব্রি ফকনার। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২৫ টেস্ট খেলেছেন এই অলরাউন্ডার। ৪০.৭৯ গড়ে এক হাজার ৭৫৪ রান করেছেন তিনি। ২৬.৫৮ গড়ে ৮২ উইকেটও জমা আছে তার ঝুলিতে। খেলোয়ড়ি জীবন শেষে কোচিং ক্যারিয়ারেও দুর্দান্ত ছিলেন তিনি।

মন্টি নোবেল: অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন তিনি। ৪২ টেস্টে ৩০.২৫ গড়ে ১৯৯৭ রান করেছেন এই অলরাউন্ডার। ২৫ বোলিং গড়ে উইকেট নিয়েছেন ১২১টি। এখনও টেস্ট ক্রিকেটে দেশের হয়ে দ্রুততম হাজার রান ও ১০০ উইকেট নেওয়া ক্রিকেটার তিনি।

লিয়েরি কনস্ট্যানটাইন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের প্রথম গ্রেট অলরাউন্ডার ধরা হয় তাকে। ১৮ টেস্ট খেলে ১৯.২৪ গড়ে রান করেছেন ৬৩৫, উইকেট নিয়েছেন ৩০.১০ গড়ে ৫৮টি। হাউস অব লর্ডসের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সদস্য ছিলেন লিয়েরি।

স্ট্যান ম্যাককেব: তিনটি স্মরণীয় ইনিংসের মালিক এ অসি তারকা। সিডনিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৭ রানে অপরাজিত থাকার পর ১৯৩৫ সালে জোহানেসবার্গে ১৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তিন বছর পর নটিংহ্যামে অ্যাশেজে চার ঘণ্টারও কম সময়ে খেলেন ২৩২ রান করেন।৩৯ টেস্টে ৪৮.২১ গড়ে ২৭৪৮ রান করেছেন এই অসি তারকা। উইকেট নিয়েছেন ৩৬টি, বোলিং গড় ৪২.৮৬।

টেড ডেক্সটার: ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৬২ টেস্ট খেলে ৪৭.৮৯ গড়ে ৪৫০২ রান করেছেন টেড। ৩৪.৯৩ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ৬৬টি। ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে ইংল্যান্ড নির্বাচকদের চেয়ারম্যান ছিলেন ডেক্সটার। আইসিসির খেলোয়াড়দের  র‌্যাকিংয়ের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

ভিনু মানকড়: ভারতের সবসময়ের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন তিনি। দেশটির কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কারের কোচ ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে ৪৪ টেস্ট খেলে রান করেছেন দুই হাজার ১০৯, গড় ৩১.৪৭। ৩২.৩২ গড়ে ১৬২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৫২ সালে লর্ডস টেস্টে ৭২ ও ১৮৪ রানের ইনিংসের পর বাঁহাতি স্পিনে ৯৭ ওভার করেন।

ডেসমন্ড হেইন্স: ক্যারিবীয়দের হয়ে ১১৬ টেস্ট খেলে ৪২.২৯ গড়ে সাত হাজার ৪৮৭ রান সংগ্রহ করেছেন ডেসমন্ড। গর্ডন গ্রিনিজের সঙ্গে জুটি বেঁধে ইতিহাস গড়েছেন হেইন্স।

বব উইলিস: ইংল্যান্ড দলের দীর্ঘকায় দুর্দান্ত পেসার ছিলেন বব উইলস। ৯০ টেস্ট খেলে ২৫.২০ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ৩২৫টি। দুই মিটার উচ্চতার এই পেসারের বাউন্সারে নাস্তানাবুদ হয়েছেন বহু ব্যাটসম্যান। অসাধারণ ইয়র্কার ও বাউন্সারে ভোগাতে পারতেন ব্যাটসম্যানদের। ১৯৮১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টে ৪৩ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন বব।

অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার: জিম্বাবুয়ের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা করে নিয়েছেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। দেশের হয়ে ৬৩ টেস্টে ৫১.৫৪ গড়ে ৪ হাজার ৭৯৪ রান করেছেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। স্টাম্পের পেছনে দাঁড়িয়ে ১৫১টি ক্যাচের সঙ্গে ৯টি করেছেন স্টাম্পিং। ভারতের বিপক্ষে ২০০০ সালে নাগপুরে তার খেলা ২৩২ রানের অপরাজিত ইনিংস এখনও টেস্ট ক্রিকেটে কিপার-ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। ক্রিকেট জীবন শেষে তিনি এখন দারুণ সফল একজন কোচ।

কুমার সাঙ্গাকারা: শ্রীলংকা দলের অধিনায়কত্ব করা এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ১৩৪ টেস্ট খেলেছেন। ৫৭.৪০ গড়ে রান করেছেন ১২ হাজার ৪০০। ক্যাচ নিয়েছেন ১৮২টি, স্টাম্পিং করেছেন ২০টি। টেস্ট ও ওয়ানডেতে শ্রীলংকার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। লাল বলের ক্রিকেটে ব্র্যাডম্যানের পর সবচেয়ে বেশি ডাবল সেঞ্চুরি তার।

Loading