নিজস্ব প্রতিনিধি – মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ এর জন্য শৈশবকালীন খেলাধুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শৈশবকালীন খেলার মাধ্যমেই শিশুর শারীরিক, মানসিক, আবেগগত ও সামাজিক বিকাশ ঘটে। খেলার মাধ্যমে শিশুরা দৌড়াদৌড়ি ও লাফালাফি করে, এর ফলে দেহের জমাকৃত অতিরিক্ত শক্তি ক্ষয় হয়,এতে শিশুর শারীরিক কাঠামো সুগঠিত হয়। দেহের জমাকৃত অতিরিক্ত শক্তি বের না হলে শিশু খিটখিট করে, ঘ্যান ঘ্যান করে ও অকারণে রাগ করে। যে সব শিশু নিয়মিত খেলাধুলা করে তাদের শরীর ও মন উভয়ই ভালো থাকে। এসব শিশুর মধ্যে হতাশা, দ্বন্দ্ব এবং আবেগজনিত উদ্বেগ হ্রাস পায়। খেলায় অংশগ্রহণের ফলে শিশুর জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধি ও শক্তিশালী হয়। খেলার মাধ্যমে শিশুরা অনেক কৌশল অর্জন করতে শিখে, এতে নতুন কিছু আবিষ্কারে ব্যক্তিত্ব বিকাশে খেলাধুলা সহায়ক ভূমিকা পালন করে। খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর যে মানসিক বিকাশ ঘটে এতে তাদের চিন্তা ভাবনা উন্নত হয়। খেলার সাথীদের সাথে আনন্দ, আবেগ, জয় পরাজয়ের মুহূর্ত গুলো ভাগাভাগি করতে পারে। কিন্তু বর্তমান লকডাউন বা কোয়ারান্টাইন থাকা শিশুরা এসব কিছু থেকে বঞ্চিত হওয়ার পথে, অনেক ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে, বিশেষ করে শহর অঞ্চলে বসবাস করা শিশুরা।
শহর অঞ্চলে বসবাস করা শিশুরা এমনিতে খেলাধুলার সুযোগ কম পায়, যার ফলে সারাদিন বন্দী অবস্থায় থাকার ফলে তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের অবনতি ঘটছে। কিন্তু আবার অনেক অভিভাবক মনে করেন যে খেলাধুলা মানে সময়ের অপচয়। কারণ, এতে লেখা -পড়া, খাওয়া-দাওয়া ও বড়দের কাজ কর্মের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। এরুপ ধারণা ঠিক নয়। পৃথিবীর সকল দেশের ছেলে মেয়েরা শৈশবকালে খেলাধুলা করে সময় কাটায়। শিশুর সব ধরনের বিকাশে খেলা ধুলার গুরুত্ব অপরিসীম আার এ ব্যাপারটা সকলেরই মানা উচিত এবং শিশুদের খেলাধুলার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করা উচিত। কারণ তাদের উন্নত মেধার বিকাশের মাধ্যমে জাতি দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আশা করা যাবে।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে শহরকেন্দ্রিক শিশুরা একেবারেই খেলার সুযোগ না পেয়ে টিভি, মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে, আর এরকম আসক্তির পরিমান বেড়ে গেলে তাদের মানসিক বিকাশের একটা ভয়াবহ অবনতি হয়তো দেখতেই হবে। তাই সকলের, পরিবারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা কে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। আর সকলের এটাও মাথায় রাখা উচিত শিশুর খেলাধুলা সময়ের অপচয় নয় বরং যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান অবস্থায় বাইরে খেলার সুযোগ যেহেতু নেই সেক্ষেত্রে বাড়ির ভিতরে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। এতে কিছুটা হলেও মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব।