নিজস্ব প্রতিনিধি – করোনা ভাইরাসকে রুখতে গোটা বিশ্ব জুড়ে চলমান টিকাকরণ অভিযানের মধ্যেই একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার দু’সপ্তাহ পরে টিকার সুরক্ষাচক্র সবচেয়ে বেশি মজবুত হয়। গবেষণাটি করেছেন ইংল্যান্ডের ইস্ট অ্যাঞ্জলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাসিলিওস ভাসিলিও এবং সিয়ারান গ্রাফটন-ক্লার্ক নামে দুই গবেষক।

কোভিড -১৯ নিয়ে ঐ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সংক্রমণের পাঁচটি সাধারণ লক্ষণের মধ্যে রয়েছে মাথা ব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া, হাঁচি, গলা ব্যথা এবং গন্ধ কমে যাওয়া। তবে এমনও বেশ কিছু সংখ্যক করোনা পজিটিভ রুগী রয়েছেন, যাদের এসব কিছুই হয়নি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর করোনা আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে খুবই কম। পাশাপাশি, আক্রান্ত হলেও ওই ব্যক্তির দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও থাকে বেশি। ইংল্যান্ডে করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ০.২ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ প্রতি ৫০০ জন মানুষের মধ্যে মাত্র একজন টিকা দেওয়ার পরেও সংক্রমিত হয়েছেন। টিকা নেওয়ার পরে কোনও ব্যক্তি কতটা সুরক্ষিত, তা চারটি জিনিস দেখে বোঝা যেতে পারে।

এগুলো হলো:

এক) কোনও ব্যক্তি কোন ধরণের ভ্যাকসিন নিচ্ছেন, তার উপর ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও ফের আক্রান্ত হওয়া নির্ভর করতে পারে বলে জানাচ্ছে গবেষণা। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে জানা গিয়েছে, মডার্না ভ্যাকসিনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় ৯৪ শতাংশ। ফাইজার ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে সম্ভাবনা কমে যায় ৯৫ শতাংশ।

দুই) ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কার্যকারিতার সময়কাল সম্পর্কে বেশ কয়েকটি গবেষণা দাবি করেছে, টিকা নেওয়ার ছ’মাসের পর থেকে ফাইজার ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কম হতে থাকে। এদাবি প্রমাণিত না হলেও, তেমন হলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও কোনও ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারেন।

তিন) ভ্যাকসিনগুলো তৈরি ও পরীক্ষা করা হয়েছিল করোনার নির্দিষ্ট ভেরিয়েন্টের উপরে। কিন্তু, করোনা নানা ভেরিয়েন্ট নিয়ে ফিরে আসায় ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দেখা গিয়েছে, ডেল্টা, আলফা-সব ভেরিয়েন্টের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের প্রভাব সমান নয়।

চার) কোনও ব্যক্তির নিজস্ব রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরেও ফের আক্রান্ত হওয়া বহুলাংশে নির্ভর করে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। সুতরাং, বয়স্ক ব্যক্তি বা যাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের ঝুঁকি বেশি থাকে।

Loading