আপনার আশেপাশের কেউ যদি হার্ট অ্যাটাক করে এবং তখন আপনি কী করবেন তা বুঝতে না পারেন, তাহলে তা আক্রান্ত ব্যক্তির জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে। এ ধরনের ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচানোর জন্য দ্রুত কী পদক্ষেপ নিতে হবে তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার আশেপাশের কারও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখলে, দ্রুত এবং ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে।

হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণের মধ্যে রয়েছে বুকে অস্বস্তি বা ব্যথা যা বাহু, ঘাড়, চোয়াল বা পেছনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা ঘাম, বমি বমি ভাব, হালকা মাথা ব্যথা বা শরীরের উপরের অংশে অস্বস্তি। যদি কারও এই লক্ষণগুলো দেখা দেয় তবে তা উপেক্ষা করবেন না বা ছোট করে দেখবেন না। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

১. অস্থির না হয়ে সাহায্য করুন

আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার আগ পর্যন্ত আপনাকে কিছু কাজ করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে যতটা সম্ভব শান্ত এবং স্থির রাখুন। তাকে আরামে বসতে বা শুয়ে থাকতে বলুন। আঁটসাঁট পোশাক ঢিলা করুন এবং তাকে আশ্বস্ত করুন যে সাহায্য আসছে। তার প্রয়োজন অনুযায়ী সাহায্য করার জন্য যে আপনি প্রস্তুত, তা তাকে বলুন।

২. অ্যাসপিরিন দিন (যদি পাওয়া যায়)

হার্ট অ্যাটাকের সম্মুখীন ব্যক্তি যদি সচেতন হন এবং অ্যাসপিরিনের প্রতি অ্যালার্জি না থাকে, তাহলে রেগুলার, নন-লেপা অ্যাসপিরিন (সাধারণত ৩২৫ মিলিগ্রাম) দিলে তা সাহায্য করতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের শুরুতে অ্যাসপিরিন চিবিয়ে বা গিলে খেলে তা সম্ভাব্য রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে সাহায্য করতে পারে। যদি নিশ্চিত হন যে আক্রান্ত ব্যক্তির অ্যালার্জি নেই তবেই কেবল অ্যাসপিরিন দিন।

৩. সাহায্য না আসা পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে থাকুন

জরুরি চিকিৎসা সেবা না পাওয়া পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির পাশে থাকুন। তাকে আশ্বস্ত করুন এবং তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন। তার উপসর্গ বা চেতনা স্তরের কোনো পরিবর্তন দেখলে তা নোট করুন। পরবর্তীতে চিকিৎসকের কাছে সেগুলো বলুন। এতে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া সহজ হবে।

৪. সিপিআর দিন (যদি প্রয়োজন হয়)

যদি আক্রান্ত ব্যক্তি শ্বাস বন্ধ করে দেয় বা চেতনা হারিয়ে ফেলে, তাহলে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) একটি জীবন রক্ষাকারী কৌশল হতে পারে। আপনি যদি সিপিআর-এ প্রশিক্ষিত হন, তাহলে অবিলম্বে এটি করা শুরু করুন। চিকিৎসা সহায়তা না আসা পর্যন্ত বুকের কম্প্রেশন এবং রেসকিউ শ্বাস রক্ত প্রবাহ এবং অক্সিজেন সঞ্চালন বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

৫. সঠিক সময়ে সাহায্য জীবন বাঁচাতে পারে

এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, হার্ট অ্যাটাক হলে সময়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত পদক্ষেপ নিলে তা আক্রান্ত ব্যক্তির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় এবং হার্টের সম্ভাব্য ক্ষতি কমাতে পারে। প্রাথমিক লক্ষ্য হলো যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। তাই লক্ষণগুলো হার্ট অ্যাটাকের কি না তা নিশ্চিত না হলেও, সতর্কতা অবলম্বন করা এবং অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা চাওয়া সবচেয়ে ভালো। সিপিআর এবং প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ জানা থাকলে এ ধরনের জরুরি পরিস্থিতিতে তা অন্যের জীবন বাঁচাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

__________________________________________________________

 

 

 

__________________________________________________________

__________________________________________________________

 

 

 

 

 

 

 

 

  

Loading