ব্রেস্টের কোনো অংশ শক্ত হওয়াকে  ব্রেস্ট টিউমার বলে। ব্রেস্টে দুই ধরনের টিউমার হতে পারে- বিনাইল টিউমার (ক্যান্সারবিহীন) ও ম্যালিগন্যান্ট টিউমার (ক্যান্সার)। বিনাইল টিউমারের অবস্থান তার উৎপত্তি স্থলে সীমাবদ্ধ থাকলেও ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের আগ্রাসী ভূমিকা যা রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা গ্রন্থিকেও আক্রান্ত করতে পারে। অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বর্তমানে যে সব নারীরা  ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য আসেন তাদের অনেকের বয়স ৪০ বছরেও কম যা রীতিমত দুশ্চিন্তার কারণ।

কারণসমূহ:

ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য প্রথমত দায়ী আমাদের খাদ্যাভাস। দৈনন্দিন জীবনে গ্রহণকৃত প্রতিটি খাবারের সঙ্গে আমরা বিষ আহার করছি। আজকাল আমরা প্রচুর ফাস্টফুড আহার করি, সবুজ শাকসবজি খুব কমই আহার করি। এসব খাদ্যদ্রব্য আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সবলের পরিবর্তে দুর্বল করছে। এর সঙ্গে রয়েছে দুশ্চিন্তা, নিদ্রাহীনতা, কম শারীরিক পরিশ্রম এবং অতিরিক্ত স্থূলতা। অতিরিক্ত স্থূলতা ব্রেস্ট ক্যান্সারের আরেকটি বড় কারণ। এ সকল বিষয়ের সঙ্গে যদি বংশগতির ধারায় ক্যান্সার থাকে তাহলে ঐ ব্যক্তি সর্বোচ্চ পর্যায়ের আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকে।

আবার কারও ব্রেস্টে আঘাতের থেকেও প্রথমে টিউমার এবং পরবর্তীতে ক্যান্সার হতে পারে। সন্তানকে বুকের দুধ পান না করানোও স্তন ক্যান্সারের একটি কারণ। ইদানীং নারীরা চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে ব্রেস্ট ছোট রাখার জন্য বিভিন্ন প্রকার মালিশ ব্যবহার করছে এবং নানাবিধ অবৈজ্ঞানিক ঔষধ সেবন করছেন যা ক্রমান্বয়ে ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে।

লক্ষণ বা উপসর্গ

ব্রেস্টের কোনো অংশ শক্ত হওয়া অথবা ব্রেস্টের নিপিলের আকৃতির পরিবর্তন হওয়া, ব্রেস্টের নিপিল থেকে রক্ত বা তরল পদার্থ বের হওয়া, ব্রেস্টের নিপিলের আশেপাশে র্যাশ বা ফুসকুড়ি দেখা  দেয়া, বগল ফুলে যাওয়া বা চাকা দেখা দেয়া, ব্রেস্টের ভেতরে গোটা ওঠা বা শক্ত হওয়া বা ক্ষতের সৃষ্টি হওয়া ইত্যাদি ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ।

চিকিৎসা পদ্ধতি:

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর অবদান। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ভাণ্ডারে ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় কার্সিনোসিন, টিউবারকুলিনাম, সোরিনাম, সিফিলিনাম, মেডোরিনাম, কার্বো-এ্যানিমেলস, আর্সেনিক এ্যাল্বাম, আর্সেনিক আয়োড, এসিড নাইট্রিক, ন্যাট্রাম সালফ, ফাইটোলক্কার মতো অসংখ্য কার্যকরী ওষুধ রয়েছে যার পরশে প্রতিনিয়ত অসংখ্য  ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগী আরোগ্য লাভ করছে। সাধারণ মানুষ আজ বুঝেছেন যে, ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির সুশীতল ছায়া অধিকতর আরামদায়ক। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে ব্রেস্ট ক্যান্সারের  রোগীদেরকে বিনাকষ্টে স্বল্পসময়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে। এ কারণে সচেতন নাগরিকগণ ব্রেস্ট ক্যান্সারে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি রোগীর দ্রুত উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং, নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন পদ্ধতি, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ঘুম, ব্যায়াম, মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপন ইত্যাদি বিষয়েও যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।

_________________________________________________________________________

 

Loading