কবিতা :- সেই সে তিথি হোকনা স্মৃতি
কলমে –– আনন্দময়ী চট্টোপাধ্যায়
সেই সে তিথি হোকনা স্মৃতি,
তবু বড় সুমধুর জাগে শিহরণ ,
কত খুশি সেই টানে ভেবে মনে সংগোপনে,
মনের আকাশে ডানা মেলে করে বিচরণ।
ফেলে আসা দিনগুলি ঘুরেফিরে কুতুহলি,
চোখের সামনে ভাসে নিয়ে বেদনার ভার,
যতই চাও না তারে ফেরাতে যে বারে বারে,
সেই দিনগুলি কভু ফিরবে না আর।
গ্রীষ্মের ভরদুপুরে ছোট্ট মেয়ে ফ্রক করে-
পিতা পাশে চোখ বুজে চুপ করে শুয়ে থাকা,
কত না ঘুমের ভান উত্তেজনা টানটান,
কখন ঘুমাবে পিতা, ধীরে ধীরে পিট টান।
বন্ধু-বান্ধবী সাথে সোজা গিয়ে বাগানেতে,
আচল ভরে কুল কুড়িয়ে খুশি হওয়া ফাগুনে,
লবণ লঙ্কা সাথে মেখে চেখে একসাথে-
বাটি ভরে সাথী সাথে খাওয়া ,স্বাদে মনে।
বৈশাখের কাঁচা আম তার সাথে কালোজাম,
হাত ভরে, ভাগ করে সকলে তে মিলে,
খুশি মনে হইচই কার বেশি কার কম-
এই নিয়ে কথা কাটাকাটি খেলা চলে।
পৌষ মাস যেই শুরু খুশিতে বুক দুরু দুরু,
টুসু পূজা নিয়ে ফুল দিয়ে সাজিয়ে সন্ধ্যাবেলা,
টুসুগান সুরে সুরে সকলে মিলে শুরু করে,
নানান উপাচারে পূজা সেরে প্রসাদ খাওয়ার পালা।
আশ্বিনে শারদীয়াতে নতুন ফ্রক, স্কার্ট ,ফিতে-
চুড়ি মালা পরে গরবেতে গরবিনী,
দু পায়ে আলতা রাঙানো পায়ে নুপুরের নিক্কন,
কতনা ছন্দে চলা সুর তুলে রিনিঝিনি।
রঙিন ফিতে দিয়ে ফুল ,মালা খোপা দুলদুল,
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আয়না নিয়ে দেখা বারবারমুখ
হাসিখুশি ছুটে ছুটে মন্ডপে সবে জুটে,
বাজি পটকা ফাটিয়ে মনে কত জাগে সুখ।
সেই খুশি সেই সুখ মনেতে জাগায় দুখ,
মনে মনে চলে স্মৃতির পাতায় সঞ্চরণ,
ভাবা যেই শেষ হলো দুচোখে মেঘ জমে গেল,
টপটপ করে পড়ে ধারা বরষণ।