কবিতা –দৃষ্টিভঙ্গী

কলমে- সুমিতা পয়ড়্যা

 

ওইতো ওইতো শিশুটি জন্মালো,

কান্নার চিৎকারে প্রতিবাদী ভাষা —আমিএসেছি।

ওদিকে কারা যেন বলে উঠল—

ও কন্যা তুই আবার এলি

ছেলে না হয়ে মেয়ে হলি

ও কন্যা তুই আবার এলি।

কান্না তখন মায়ের চোখে;শ্রাবণ জুড়ে বৃষ্টি

আকাশ কোনে বারংবার বিজলী বাতির সৃষ্টি।

একটা দুটো পার হল দিন

অনেক সময় পেলে

মা বলে যান-বৃষ্টি তুমি এখন অনেক বড় হলে

চলবে ভালো করে।

বৃষ্টি শুধু ঘাড় নোয়াল অবাক চোখে চেয়ে

মেয়ে হলে এমনতর না পেয়ে পেয়ে।

প্রতিবাদের ভাষা কোথায়! কোথায় হারালো

বিষন্নতায় ফ্যালফ্যালিয়ে তাকাল।

এটা কোর না, ওটা কোর না,মানা অনেক কিছু

ইচ্ছে হলেও বাঁধনে বাঁধা কঠিন বাস্তব নিয়েছে পিছু।

কালচক্রের আবর্তনে সময়ের বাঁধা ছকে —

কন্যা শিশুই সকলের মা

কন্যা শিশুই বোন

কন্যা শিশুই পতিব্রতা স্ত্রী

কন্যা শিশুই সকলের অনুরণন।

দিন চলে যায় রাত চলে যায়

ধরণীর কোল এখনো অন্ধকারময;

তিলে তিলে অবক্ষয়

কন্যা শিশু দামী নয়।

সারা জীবন নির্যাতিতা

তবু মহিমা অপার

জগৎ জুড়ে সেই মায়েরই কোলে

জন্ম বারংবার।

কখনো মোহময়ী, কখনো প্রিয়ংবদা

কখনো কিন্নরী , কখনো অপ্সরা

কখনো মহীয়সী, কখনো পটীয়সী

কখনো মৃন্ময়ী মূর্তি মাটিতে গড়া।

কখনো দুর্গতিনাশিনী দুর্গা

কখনো দশপ্রহরণধারিনী

ভালোবাসার আধার হয়ে

প্রকৃত ভালোবাসেন যিনি।

সে তো ওই কন্যা শিশুটি

চিনতে পারে না কেউ

সবাই শুনেছে সেই প্রতিবাদী কণ্ঠ

দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায় না কেউ।

Loading