কবিতা – বঞ্চিত বাঙালী
কলমে ও কন্ঠে – স্মরজিৎ দত্ত
বেহালা, পর্ণশ্রী, কলকাতা
সালটা ১৯৬১ উনিশে মে
আমারই মাতৃভূমির ছোট্ট রাজ্য আসাম।
সেই রাজ্যের কাছাড় জেলার
ছোট্ট অঞ্চল শিলচর রেল স্টেশন।
সেখানে জড়ো হয়েছিল হাজার মানুষ
চলছিল সত্যাগ্রহ আন্দোলন।
ওদের দাবি ছিল ছোট্ট,
রাজ্যের দ্বিতীয় ভাষা বাংলা
সেই বাংলা ভাষার স্বীকৃতি চাই।
তাতেই অপরাধ তাদের,
তৎকালীন আসাম সরকারের চোখে
তা ছিল হয়ত দেশদ্রোহিতা।
আর তাই অসমের অসামরিক বাহিনী
রুখে দিতে চেয়েছিল তাদের।
বন্দুকের নল উঁচু করে একে একে
হত্যা করতে তাদের,
তাদের একটুও হাত কাঁপেনি।
ওদের অপরাধ
ওদের মাতৃভাষার স্বীকৃতি চাওয়া।
একে একে চলে গিয়েছিল সেদিন
কমলা ভট্টাচার্য,কানাইলাল নিয়োগী,
তরণী চন্দ্র দেবনাথ,শচীন্দ্র পাল
এমন অনেক অনেক সন্তান;
তারা কেউই ছিল না বয়স পচিশ-এর উর্দ্ধে।
এমন ভাবেই চলছে;
চলছে লড়াই বাঙালির মেরুদন্ড
মেরুদন্ড ভাঙতে চিরকাল।
ব্রিটিশ চাইনি বাঙালি জাগুক;
কারণ তাদের বিনাশকারী ছিল ওই বাঙালি।
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন
প্রতিহত করতে চেষ্টা হয়েছিল
কেবলই বাঙালির জাগরণের ;
জাগরন রোখার জন্যই।
আজ একবিংশ শতাব্দীতে
শতাব্দীতে এসেও সেই বড় প্রশ্ন
এখন বাঙালি কি জাগতে জানে?
জানে কি তাদের পূর্বপুরুষের
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস?
তবে বাংলা ভাষাভাষীর
আজও কেন বঞ্চনা সহ্য করতে হয়?
তবে কি কবির প্রশ্ন-কেই করতে হবে পুনরাবৃত্তি?
“রেখেছো বাঙালি করে
মানুষ করোনি।”