দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া রোধের প্রধান এবং সঠিক উপায় হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। বার্ধক্য রোধ করা সম্ভব নয় ঠিকই, কিন্তু আপনার শরীর ঠিক কতটা বুড়িয়ে যাবে সেটা কিন্তু অনেকাংশে আপনার ওপরই নির্ভর করে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার সামান্য পরিবর্তন ও কিছু হালকা শরীরচর্চার মাধ্যমে সুস্থ থাকা সম্ভব। বিশেষ করে বয়স ৪০ বছর পেরোলেই শরীরে অনেক রকম পরিবর্তন আসে এবং প্রাকৃতিক এই পরিবর্তন মেনে নিতে হয়। এ সময় মেটাবলিজম রেট কমে আসে আবার মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রতি এক অদম্য ইচ্ছা জন্মায়। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার; যেমন—ভাত, পাস্তা, পাউরুটি ইত্যাদিও বেশি খেতে ইচ্ছা করে। কিন্তু এই বয়সে শরীরের জন্য বেশি ক্যালরি প্রয়োজন হয় না। ফলে ওজন বৃদ্ধির সমস্যা বাড়তে থাকে। সঙ্গে মহিলাদের মেনোপজের কারণে মানসিক অবসাদ ও হাইপোথাইরয়েডিজমের মতো সমস্যাও দেখা যায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে পেশির দুর্বলতা ও অন্যান্য সমস্যা প্রকাশ পায়।

খাদ্যাভ্যাস এসব সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ জন্য খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।

প্রতিদিন খাবারে লো ফ্যাট ও উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খান। যেমন—হোল গ্রেইন, ডাল, ফল, সবজি, বাদাম ইত্যাদি। ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও মিনারেলস ইত্যাদি শরীরের বুড়িয়ে যাওয়া রোধে সাহায্য করে।

ক্যালসিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। লো ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার, ডাল, সয়াবিন, কালো তিল প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখুন।

কফি, সফট ড্রিংকস, অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। এগুলো শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব তৈরি করে। এর বদলে স্যুপ, সবজি বা ফলের রস, ঘোল, ডাবের শাঁস ইত্যাদি খান।

৪০ বছর পার হওয়ার পর ওজন বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ মিষ্টির প্রতি আকর্ষণ। এ ক্ষেত্রে জিংক খুব প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ। এটি ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে মিষ্টির প্রতি আকর্ষণ কমে। এর জন্য কুমড়ার বীজ, কালো ও সাদা তিল রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়। চিনির বদলে খেজুর, কিশমিশ, টাটকা ফল ইত্যাদি খেতে পারেন।

প্রাণিজ প্রোটিন সপ্তাহে একবারের বেশি খাবেন না। তবে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের জন্য সপ্তাহে দু-তিনবার তৈলাক্ত মাছ খেতে পারেন।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ‘বি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন। প্রোটিনও খুব গুরুত্ব্বপূর্ণ। দিনে অন্তত একটি ডিম, এক কাপ দই, এক কাপ ডাল এবং ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম মাছ, মুরগির মাংস খান। এতে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়বে। ঘন ঘন ক্ষুধাও পাবে না।

মানসিক চাপ কমানোও খুব জরুরি। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে মেডিটেশন ও যোগব্যায়াম করা যেতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৪৫ মিনিট হাঁটা উচিত।

খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি অবশ্যই প্রতিদিন কিছু অ্যারোবিক এক্সারসাইজ করার অভ্যাস করুন। এতে জয়েন্ট ব্যথা, পেশিতে ব্যথা ইত্যাদিও কম হবে।

_________________________________________________________________________

 

Loading