নিরঞ্জন দোলই – সংবিধান দিবস পালন করল ইন্ডিয়ান ইউনিটি সেন্টার (IUC) তমলুক থানার নিমতৌড়ি স্মৃতি সৌধ সভা কক্ষে। দেশের সংবিধানকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে সংবিধানের মূল ধারাকে অমান্য করে তৈরী করা নতুন আইন বাতিলের প্রতিবাদে প্রত্যেক বক্তাই প্রতিবাদে সামিল হোন। বিশেষ করে দেশের তিন কৃষি আইন, সিএএ ২০০৩, সিএএ-২০১৯, শিক্ষা আইন ২০২০, এনআরসি, এনপিআর সহ ইত্যাদি বিষয় ভিত্তিক বক্তারা বক্তব্য পেশ করেন। সেই সঙ্গে জনগণের প্রতি আন্দোলনমুখী হওয়ার আওয়াজ তোলেন।
ওই সভায় বিশিষ্ট লেখক মানিক ফকির বলেন, ব্রাহ্মণ্যবাদীরা পিছিয়ে পড়া মূল নিবীসীদেরকে কোনঠাসা করে রেখেছেন। তার একটাই কারণ কেন্দ্রীয় সরকার তাদের দাসে পরিণত করার চক্রান্ত শুরু করেছে। ওই সব চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে প্রতিবাদের ঝড় আরও ত্বরান্বিত করতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি এনআরসি, এনপিআর, সিএএ ইত্যাদি বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ও জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। আর এম এস (RMS) ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট তারারাম মেহনা বলেন, দেশ ধর্ম নিরপেক্ষ না হলে জনগণ বিপদের মুখে আসন্ন। দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই সংবিধানকে জানতে হলে ভারতের ইতিহাস আগে জানুন ও প্রতিবাদে সামিল হোন। সেই সঙ্গে তিনি আইইউসি’র কর্মকর্তাদের বেশি বেশি করে সজাগ থাকার দৃঢ় কন্ঠে আওয়াজ তোলেন। আইইউসি’র সহসভাপতি গোবর্ধন মান্না বলেন, বর্তমান সমাজের পিছিয়ে পড়াদের রাজনীতির একশ্রেণীরা সমাজের মূল স্রোতের অনুকূলে এগিয়ে রাখেনি। তাই এদের পরিবারের সন্তানরা পুষ্টির অভাবে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। তাই বর্ণবাদীদের বয়কট করুন। আইইউসি’র সভাপতি কাজী কামরুজ্জামান বলেন, দেশ আজ বিপন্ন, দেশ স্বাধীন হলেও আমরা আজও স্বাধীনতার স্বাদ পাইনি। আজও আমরা সেই তিমিরে। বিচার ব্যবস্থায় এখন দখল করেছে ব্রাহ্মণ্যবাদী শাসকশ্রেণী। থানা থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত ভূমিপুত্রেরা বেশিরভাগই তেমন কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। তাই বন্ধু ঘুমিয়ে না থেকে সচেতন হোন এবং প্রতিবাদের ঝড় তুলুন। শিবব্রত সানা বলেন, সমাজের মানুষকে বুঝতে হলে মগজ শান দিতে হবে। এর জন্য শিক্ষা অর্জন করতে হবে। রাজনীতির স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকুন।
আই ইউ সি’র নেতা ও দলিত মুসলিম ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির সম্পাদক এম এম আব্দুর রহমান বলেন, সংবিধানের ধারাকে উপেক্ষা করে দেশকে তলানীতে পরিণত করছে দেশের ব্রাহ্মণ্যবাদীরা। সংবিধানকে অবমাননা করা হচ্ছে। দেশের স্বাধীনতাকে হরণ করা হচ্ছে। তাই আমাদের লড়াই ওই সব রাজনীতির নেতাদের সঙ্গে। ‘ওদের’ প্রতিহত করে আমাদের অধিকার বুঝে নিতে হবে।
আই ইউ সি’র নেতা আনোয়ার মল্লিক বলেন, সংবিধান আছে বলেই গণতন্ত্র আছে। সংবিধান বাঁচাও, দেশ বাঁচবে। আন্দোলন ছাড়া বাঁচা যায় না। সুকৌশলে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে আমাদের মুভমেন্ট করতে হবে। তবেই আমরা সফলতা পাবো। এই অঙ্গীকারে আমরা একত্রিত হই। প্রতিবাদের ঝড় তুলি।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ডোম পরিসঙ্গ পশ্চিমবঙ্গের নেত্রী মাজেদা বিবি, মূল নিবাসী সমিতির পীযূষ গায়েন, বিশ্বনাথ দাস, তরুন মন্ডল, আই ইউ সি’র সম্পাদক রামপ্রসাদ ঘোড়াই, আই ইউ সি’র সাধারণ সম্পাদক মোহিত কর প্রমুখ।
ওই অনুষ্ঠানে ‘রোডম্যাপ’ পত্রিকা উদ্বোধন করেন লেখক মানিক ফকির সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ‘রোডম্যাপ’ পত্রিকাটির সম্পাদক হলেন এম এম আব্দুর রহমান।