কোপার্নিকাসের পৃথিবী

✍ -কলমে- কৃষ্ণকলি বেরা

ইডেন এস্টর পার্ক, ব্লক-এ/২এ, ৮৩৪ উত্তর-পূর্ব ফরতাবাদ, সাহা পাড়া

কলকাতা -৭০০০৮৪, থানা -নরেন্দ্রপুর

 

সেদিন কল্পনা খুব হেসেছিল বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়েছিল অনেকদিন পর। এক নিঃশ্বাসে কমলকে অনেক কথা শুনিয়েছিলো।

বড় বড় কথা শুনিয়েছিলে আমি অনাথ আশ্রমে মানুষ , তাতে কি আসে যায়, আমি তোমাকে ভালবাসি আমি তোমাকে বিয়ে করে সংসার করতে চাই। খুব ভালো সংসার করেছ আমার সাথে।

তুমি তো জানতে আমার মাদার আমাকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছিলো, আমার বয়স তখন তিন, বৃষ্টির মধ্যে আমি বসে কাঁদছিলাম পাশে আমার মৃত “মা” শুয়ে ছিল। তিনি রাস্তার থেকে তুলে এনে আমাকে মানুষ করেছে। সে মায়ের অনেক সম্পত্তি ছিল তোমার খুব  লোভ ছিল আমি বুঝতে পারিনি “মা” ঠিক বুঝেছিল।

তোমার অত্যাচারের কথা মাকে কোনদিন বলিনি রোজ আমাকে মারতে  টাকার জন্য। এত ভালো চাকরি করো অথচ তোমার টাকা লাগতো কি জন্য আমি জানতাম না। তোমার খুশিকে খুশি করার জন্য পরে বুঝেছিলাম।

তাকে বিয়ে করে এনে ঝড় জলের রাতে আমাকে বার করে দিয়েছিলে। আমি তখন অন্তসত্ত্বা ছিলাম তিন মাসের।তোমাকে ঘৃণায় বলিনি। সারারাত প্লাটফর্মে বসে মাদারের কাছে চলে আসি। সে আমাকে বুকে টেনে নিয়েছিল, বলেছিল।

– আমি তো আছি রে তোর চিন্তা কি –

সব শুনে কমলের চোখের জলের ধারা বইছে। আজ নিঃস্ব

তার খুশি সব সম্পত্তি লিখিয়ে তাকে ঘাড় ধরে বার করে দিয়েছে বাড়ি থেকে। আর কোন সন্তান ও জন্মায়নি।সে ছিল বউবাজারের বেশ্যা, তার একটি ছেলেও ছিল।

কলাকৌশলে ছেলেটিকে দত্তক নিয়ে কমলকে বাবা বানিয়েছিল। অনেকদিন পরে সে বুঝেছিল।

অনেক কষ্টে ঠিকানা জোগাড় করে কল্পনার কাছে এসেছিল মাফ চাইতে।  দেখল একটি খুব সুন্দর ছেলে, ঘরে ঢুকেছে । মুখশ্রী একদম কমলেরই মত।

 ছেলেটি তার মুখের মতন একজন লোককে দেখে অবাক হয়ে গেল।

-এ অনাথি ,তোমার ছেলে ।

-তাহলে আমি বাজা পুরুষ না  এই কথাটা শুনে এসেছি বরাবর খুশির কাছে। তাই সে দত্তক নিয়েছে তার নিজের ছেলেকে। –কল্পনা আমি আজ খুব খুশি যে আমি নিঃসন্তান নই।আমি আজ উঠি মাঝে মাঝে ছেলেটাকে দেখতে আসবো।

-“বাবা” “মা” হয়তো কোনদিন ক্ষমা করতে পারবেনা। কিন্তু আমি চাই তোমরা একসাথে থাকো।এইটুকু আমার শান্তি আমি অনাথ নই।

-তুই আমাকে বাবা বলে ডাকলি এর থেকে পরম শান্তি আমার আর কিছুই নেই।

……………………………………………………………………………………………………

 

 

 

Loading