মুখে আলসার বা ঘা এক ধরনের ক্ষত, যা সাধারণত ব্যথাযুক্ত হয়ে থাকে। এই ঘা মুখের মাড়ি, ঠোঁট, জিহŸা, গালের ভেতরের অংশ ও তালুতে হয়ে থাকে। সাধারণত আঘাতের কারণে (যেমন ভাঙা দাঁত বা গোড়া), হরমোনাল পরিবর্তন বা মানসিক চাপ থেকে হয়ে থাকে। এই ঘাগুলো সাধারণত এমনিতে চলে যায় বা কোনো কোনো সময় চিকিৎসা লাগে।

 বেশির ভাগ সময়ে ঘাগুলোতে ব্যথা হওয়ার কারণে কথা বলতে, খাওয়া দাওয়া করতে বা জলপান করার সময় সমস্যা হয়। কোনো কোনো সময় মুখে আলসার ভাইরাসজনিত কারণ বা অটো ইমিউন ডিজিজ, যা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যাজনিত কারণে হয়ে থাকে।

 সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে অ্যাপথাস আলসার। এ ছাড়া দেখা যায়, ওরাল লাইকেন প্ল্যানাস, লিউকোপ্লাকিয়া, ইরাইথ্রোপ্লাকিয়া, ওরাল থ্রাস ও মুখের ক্যান্সার।

 কারণগুলো

 * দাঁতের যেকোনো ধরনের ট্রিটমেন্ট করার সময় ওরাল টিস্যুতে আঘাতজনিত কারণে হতে পারে।

 * অসাবধানতায় মুখের গালে বা জিহŸায় কামড় লাগার কারণে হতে পারে।

 * এলার্জির কারণে হতে পারে।

 * অর্থোডোনটিক্স ব্রেসেস বা রিটেইনারের কারণে আঘাত লাগতে পারে।

 * টুথপেস্টে এবরেসিভ উপাদান বেশি থাকলে সেখান থেকে মুখে ঘা হতে পারে।

 * এসিডিক খাবার যেমন- কমলা, আপেল ও স্ট্রবেরি জাতীয় ফল বেশি খেলে হতে পারে।

 * মানসিক চাপের কারণেও হতে পারে।

 * অনেক সময় ঘুম কম হলেও হতে পারে।

 উপসর্গ

 * ঘার চারপাশে লাল দাগ দেখা যায়।

* ক্ষতস্থান হলুদ, সাদা বা ধূসর বর্ণের হয়ে থাকে।

* ক্ষতের চারপাশে ফুলে যেতে পারে।

* দাঁত ব্রাশ করার সময় ব্যথা হতে পারে।

 * ঝাল, লবণাক্ত খাবার, টকজাতীয় খাবার খাওয়ার সময় ব্যথা বেশি অনুভব হতে পারে।

 করণীয়

 * প্রচুর পরিমাণ জলখেতে হবে (৮ গ্লাস সর্বনি¤œ)।

 * মুখ ও দাঁতের সঠিকভাবে যতœ নিতে হবে।

 * প্রতিদিন লবণ গরম জলদিয়ে কিছু সময় ঘরে কুলকুচি করতে হবে।

 * সমপরিমাণ পানির সঙ্গে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের সঙ্গে জলমিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে।

 * গরম, ঝাল ও ভাজাপোড়া খাবার বর্জন করতে হবে।

 * এনেসথেটিক্স জেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

 চিকিৎসা

 বেশির ভাগ মুখের ঘা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। ফিজিশিয়ান সাধারণত উপসর্গ নিরাময়ের জন্য ওষুধ দিয়ে থাকেন।

 * এন্টিসেপটিক জেল বা মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা।

 * স্টেরয়েড ওয়েনমেন্ট (ট্রায়াম সিনোলন)।

 * ইমিউনো সাপ্রেসিভ ওষুধ সেবন করা (বেশি গুরুতর হলে) ।

 

 

 

 

 

 

 

  

Loading