চোরাবালিতে পা রেখে

 

কলমে  – নীলিমা বিশ্বাস পাল

৩৮ রাজা রামমোহন রায় রোড, মাইতি পাড়া, কলকাতা – ৪১

আশ্বিনের বৃষ্টি ভেজা রাতে একা একটা ডিঙি নৌকোর মতো চেতনা ছেড়ে অবচেতনার দিকে ক্রমাগত ভেসে চলেছি।

 

” ভুল সবই ভুল” মধ্য গগনে চোখে ভাসলো অজান্তেই হারানো রঙিন দিন।

কালের স্রোতে অশ্রু ঝরা চোখে দেখি আজও পড়ে আছে একাধারে আমার আদুরে বুনো ইচ্ছেরা অমলিন।

বহুদিন মেঠোপথে হাঁটি নি কোন এক অজানায়,

সারা অঙ্গ জুড়ে শরতের শিশির মাখি নি ভোরের স্নিগ্ধতায়।

মেঠো পথ ধরে বাউলের সুরে মাতি নি হৃদয় আঙিনায়।

বসন্ত পাড়ি দেয় অতৃপ্ত পিছুটানে,মান অভিমান, অভিযোগ অনুযোগের মিশেলে দূরত্ব বেড়ে চলে দিবানিশি।

তবুও প্রাণের সবুজে সবুজ ঘেরা পাহাড়িয়ার শহর ছেড়ে,আজ ঝা চকচকে তিলোত্তমা কে ভালোবেসেছি অহর্নিশি।

নিয়ন বাতির শহর যখন ঘুমোই রাতের নিস্তব্ধতার কোলে,

তখন আমার মনের অন্তর্বাস ভরে ওঠে পাহাড় সম অভিমানের নোনতা জলে।

মনকেমনের নষ্টালজিয়ায় গোপন চিঠি উড়ে যায় বেনামী মেঘবালিকার ঠিকানায়।

মনের গোপনীয়তায় সাজানো যন্ত্রনার স্মৃতি সুখ নালিশ জানায় অন্তরাত্মায়।

স্মৃতির পাতায় কেবলই পেন্সিলের দাগ ,জলরঙা ছবির আঁকিবুঁকি,

সম্পর্কের কুয়াশায় পুঞ্জীভূত কিছু আবেগ অনুভূতি, ছেড়ে যাওয়া জীবনের ঝরাপাতা সাঁতরে পার হচ্ছি জীবনরথে।

সুখ দুঃখের সমুদ্রের চোরাবালিতে, কল্পনা ও বাস্তবের জটিল সমীকরনের সমাধানে কখন যেন বেলা ফুরিয়ে মধ্য লগনে এসে দাঁড়ালাম।

চোখের পর্দায় ধরা পড়ে নি সমীকরনের সমাধান ,

প্রতিচ্ছবি তে কেবলই মিথ্যে ছলনার বিবরণ।

প্রবহমানতায় আপন গতিতে যান্ত্রিক নাগরিক সভ্যতায় দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলি অনবরত,আর ঘৃনা করি এই নমনীয় শরীরে।

বাঁচার জন্য বাঁচি না, বাঁচতে হবে তাই বেঁচে আছি।

কন্টকাকীর্ণ পিচ্ছিল পথে হাঁটতে হাঁটতে আজ আমি ক্লান্ত, নিজের অস্তিত্ব কে বাঁচিয়ে রাখতে হৃদ বারান্দায় সযত্নে লিখে গেলাম ” ভালোবাসি”

জানি এই চার অক্ষরের কখনো মরন হবে না।

দুঃখ হতাশা গ্লানি রিক্ততা এরা আমার নয় ক্ষণস্থায়ী,এরা আমার বন্ধু চিরস্থায়ী।

নীরব রাতের জোৎস্না প্লাবিত আকাশ আর এলোমেলো উষ্ণ হাওয়া আমার চিরসঙ্গী।।

 

 

Loading