ইংরেজি নাম অ্যাজমা এবং বাংলায় হাঁজলবলা হয়; যার অর্থ হাঁপান বা হাঁ-করে শ্বাস নেয়া। হাঁজলবা অ্যাজমা ফুসফুস এবং শ্বাসনালির প্রদাহজনিত রোগ। হাঁজলবলতে আমরা বুঝি শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টিজনিত শ্বাসকষ্ট। এই রোগে গলা এবং বুকের মধ্যে শোঁ শোঁ শব্দ হয়; কাশি, বুকে চাপ অনুভব করে ফলে, রোগী স্বল্প মাত্রায় শ্বাস নিতে পারে। এগুলো একদিনে একাধিকবার হতে পারে আবার এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে হতে পারে। ব্যক্তিভেদে হাঁপানির লক্ষণগুলো রাতে, দিনে, শীতে, বর্ষায়, ভারী কাজ, ব্যায়াম বা খেলাধুলা করলেও বেড়ে যেতে পারে। সারা বিশ্বের প্রায় ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ অ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্ত। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫০ হাজার লোক এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং মাত্র পাঁচ শাতংশ রোগী চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ পান।
কারণ:
হাঁজলজিনগত এবং পরিবেশগত কারণে হয়। পারিবারিক ইতিহাসে যাদের পিতার বা মাতার বংশে এলার্জি, ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগা বা হাঁজলরয়েছে তারা হাঁজলহওয়ার ঝুঁকিতে বেশি রয়েছেন। এছাড়াও ছোটবেলায় নিউমোনিয়া হলে অথবা চর্মরোগ ইনজেকশন বা মলমের প্রলেপ দ্বারা চিকিৎসা করলে পরবর্তীতে হাঁজলহওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
পরিবেশগত কারণগুলোর মধ্যে বায়ুু দূষণ এবং বাতাসে এলার্জেন বা এলার্জি উদ্রেককারী উপাদানের উপস্থিতি এবং বিভিন্ন ওষুধের পার্শ^প্রতিক্রিয়া হাঁজলরোগের কারণ।
উপসর্গ:
হাঁপানির বৈশিষ্ট্য হলো বারবার শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া ও কষ্টসহকারে শ্বাস নেয়া, বুকে চাপ ধরা বা বুকের পেশি শক্ত হওয়া, শ্বাসনালী সরু হয়ে যাওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বল্পতা (শ্বাসকষ্ট) এবং কাশি। উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর ফুসফুস থেকে কফ তৈরি হতে পারে কিন্তু তা সহজে বের হতে চায় না। ব্যক্তিভেদে হাঁপানির লক্ষণগুলো রাতে বা দিনে যে কোনো সময় বেড়ে যেতে পারে এবং সহজেই ব্রঙ্কোস্পাজম বা শ্বাসনালি সরু হয়ে যেতে পারে। আবার ঠাণ্ডা আবহাওয়াতে বিশেষ করে শীতকালে কারো কারো হাঁজলবৃদ্ধি পায়। আবার অনেকের হাঁজলবর্ষাকালে, বৃষ্টির পানিতে এমন কি গোসলের পরেও বৃদ্ধি পায়।
চিকিৎসা:
হাঁজলবা অ্যাজমা চিকিৎসা জন্য হোমিওপ্যাথিক খুবই কার্যকরী ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। হাঁজলহোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় সম্পূর্ণ নিরাময় হয়। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ভাণ্ডারে হাঁজল রোগীর চিকিৎসার জন্য সোরিনাম, মেডোরিনাম, আর্সেনিক অ্যালবাম, ন্যাট্রাম মিউর, ন্যাট্রাম সালফ, কার্বোভেজের মতো অসংখ্য কার্যকরী ওষুধ রয়েছে। এসব ওষুধ সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলেই হাঁজলবা অ্যাজমা সম্পূর্ণ নিরাময় হয়। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে হাঁজলরোগীরা বিনা কষ্টে স্বল্প সময়ে সম্পূর্ণরূপে স্থায়ীভাবে আরোগ্য লাভ করে। এ কারণে হাঁজল রোগীসহ জটিল ও দুরারোগ্য রোগীরা সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের জন্য হোমিওপ্যাথির দিকে ঝুঁকছেন।
_________________________________________________________________________
90 total views, 2 views today