হাঁটু শরীরের সবচেয়ে বড় অস্থিসন্ধি। দাঁড়ানো থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে এই সন্ধি। ঊরুর হাড় বা থাইবোন কিংবা ফিমারের নিচের প্রান্তের সঙ্গে শিনবোন বা টিবিয়ার ওপরের প্রান্ত ও নি-ক্যাপ অথবা প্যাটেলা সম্মিলিতভাবে এ সন্ধি তৈরি করে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ডিভাইস বসিয়ে দেওয়াই হচ্ছে হাঁটু প্রতিস্থাপন। অকার্যকর নি বা হাঁটু সার্জারির মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করে ধাতব বা প্লাস্টিকের কৃত্রিম হাঁটু স্থাপনকে বলে নি রিপ্লেসমেন্ট। নানাভাবে হাঁটু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। সবচেয়ে বড় কারণ আর্থ্রাইটিস বা বাত। এর মধ্যে তিন ধরনের আর্থ্রাইটিস সন্ধির বেশি ক্ষতি করে। এগুলো হচ্ছে-

অস্টিওআর্থ্রাইটিস : এটি বয়সজনিত অসুখ। এতে সন্ধি ক্ষয়ে যায়, সন্ধির চারপাশের লিগামেন্টগুলো আংশিক বা পুরোপুরি ছিঁড়ে যায়। অস্টিওআর্থ্রাইটিস সাধারণত ৫০ বছরের পর হয়। তবে যে কোনো বয়সে এ রোগ হতে পারে। এতে হাঁটু ক্রমে শক্ত হয়ে যায় এবং তাতে ব্যথা করে।

রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস : হাঁটু সন্ধির চারপাশে থাকা সাইনোভিয়াল মেমব্রেন মোটা হয়ে যায় ও প্রদাহে আক্রান্ত হয়। প্রদাহের কারণে সন্ধির ভেতরের কার্টিলেজ বা তরুণাস্থি ক্ষয়ে ব্যথা করে।

আঘাতজনিত আর্থ্রাইটিস : হাঁটুতে আঘাত পাওয়ার কিছুদিন পর এ রোগ শুরু হয়। অনেক সময় আঘাতে হাঁটু সন্ধির চারপাশের হাড়ে চিড় ধরে, লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়।

হাঁটু প্রতিস্থাপন : সার্জারিতে হাঁটুর সব হাড় সরানো হয় না। সন্ধির কিছু অংশ সরিয়ে সেখানে ধাতব অংশ বসিয়ে ব্যবহারযোগ্য একটি অস্থিসন্ধি তৈরি করা হয়। এজন্য প্রথমে সন্ধির ক্ষতিগ্রস্ত কার্টিলেজ ছেঁচে তুলে ফেলা হয়।

যখন করাবেন : আর্থ্রাইটিস বা আঘাতের কারণে হাঁটুতে তীব্র ব্যথা, শক্ত হয়ে যাওয়া, হাঁটাচলার অসুবিধা হলে; এমনকি সিঁড়ি ভাঙতে না পারলে, চেয়ারে উঠতে ও বসতে অসুবিধা হলে, লাঠি বা অন্য কিছুর সাহায্য নিয়ে হাঁটতে হলে; শুয়ে-বসে থাকলেও মাঝারি থেকে তীব্র মাত্রার হাঁটুব্যথা হলে।

সার্জারির আগে : সাধারণ কিছু পরীক্ষা করা হয়। দেখা হয় রোগী সার্জারির জন্য উপযুক্ত কিনা। সার্জারির পর রোগী কতখানি কর্মক্ষম হতে পারে, সে বিষয়ও পর্যালোচনা করা হয়। হাঁটু সন্ধির নাড়াচাড়া, শক্তি, লিগামেন্ট ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করা হয়। এক্স-রেসহ আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। যেমনÑ এমআরআই। রোগীর হার্টের অসুখসহ অন্যান্য জটিল রোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়। রক্ত ও প্রস্রাবের পরীক্ষা, ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রামও করে দেখতে হয়।

সার্জারির পর : সার্জারির পর বাড়িতে এসে রোগীর কিছু বিষয় মেনে চলতে হয়। যেমন ধীরে ধীরে হাঁটাচলা শুরু করতে হয়, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় হাতল বা লাঠির সহায়তা নিতে হয়, ভারী কিছু বহন করা যায় না।

আধুনিক চিকিৎসা : দেশেই চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী, কোমর ব্যথার ৯০ শতাংশ রোগী সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে শতভাগ সুস্থ হয়ে যান। অপারেশনের প্রয়োজন নেই। ১০ শতাংশ রোগীর অপারেশন লাগতে পারে।

__________________________________________________________

 

 

 

__________________________________________________________

__________________________________________________________

 

 

 

 

 

 

 

 

  

Loading