ডা. রোজেন বলেন, “যদি চোখের পাপড়িতে হলদে বা কমলা রংয়ের মতো চামড়া বেড়ে ওঠে বা ত্বকের কোথাও মোমের মতো ফোলা দেখা দেয়, তবে সেটা হল উচ্চ কোলেস্টেরল বা ডায়াবেটিসের লক্ষণ।”

এই অবস্থাকে বলা হয় ‘ক্সান্থোমাস’। বিশেষ করে বৃদ্ধদের মাঝে বেশি দেখা দেয়।

‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’য়ের তথ্যানুসারে উচ্চ কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

‘ক্সান্থোমাস’ নিজে থেকে সেরে যায় না। এজন্য ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক পরামর্শ দিচ্ছে, হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখতে কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি তামাক গ্রহণ থেকে দূরে থাকতে হবে।

নখে বেগুনি দাগ

নখ আসলে ত্বকের কোষ দিয়েই গঠিত হয়। আর ত্বকের মতো চুল এবং নখ দেহের বাইরের স্তর। শরীরের ভেতরের সমস্যা যেমন ত্বকে দেখা দেয় তেমনি নখেও ফুটে ওঠে।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্যানুসারে- হৃদরোগ সম্পর্কিত নখের পরিবর্তনকে বলা হয় ‘স্প্লিন্টার হেমোরিজ’। এর ফলে নখে লম্বা লম্বা বেগুনি দাগ দেখা দেয়।

ডা. রোজেন বলেন, “দেখলে মনে হবে কাঠের চিকন কোনো টুকরা নখের ভেতর ঢুকে বসে আছে। সাধারণত নখে আঘাত লাগলে এরকম হতে পারে। তবে এর সাথে হৃদ-সমস্যাও জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে যদি কয়েকটি নখে বেগুনি দাগ দেখা দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “আঙ্গুলের আগা ফোলার সাথে নখের পরিবর্তন, লাল বা নীলচে দাগ দেখা দেওয়া হতে পারে হৃদরোগ, হৃদ-সংক্রমণ বা ফুসফুসের রোগের লক্ষণ।”

‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি’র তথ্যানুসারে, যদি হৃদ-সংক্রান্ত সমস্যা হয় তবে লালচে বা বেগুনি দাগের সাথে অন্যান্য লক্ষণও দেখা দেবে, যেমন- অনেক জ্বর, দুর্বলতা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন অথবা ক্লান্তি।

যদি আঘাতের কারণে ‘স্প্লিন্টার হেমোরিজ’ হয়, সেক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না। তবে আঘাত ছাড়াই যদি দেখা দেয় তখন ত্বক-বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় যেভাবে ত্বকের যত্নের রুটিন উন্নত করা যায়

প্রাথমিক লক্ষণে হৃদরোগ ধরতে পারলে বিপদের ঝুঁকি কমানো যায়।

ডা. আওয়ান পরামর্শ দেন, “এজন্য নিয়মিত হাত-পায়ের আঙ্গুল পরীক্ষার করার পাশাপাশি প্রতিদিনের ত্বক পরিচর্যায় কিছু বিষয় নিয়মিত নজর রাখা উচিত।”

এসবের মধ্যে রয়েছে-

  • ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার মাখার সময় চোখের পাতা ও আশপাশ ভালো মতো পর্যবেক্ষণ করা। মোমের মতো ফোলাভাব দেখা দিলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

  • ম্যানিকিউর বা পেডিকিউর করার সময় নখ ও আঙ্গুলের মাথার দিকে নজর দেওয়া। যে কোনো পরিবর্তন চোখে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

  • পায়ে লোশন মাখার সময় খেয়াল করা কোথাও ফোলাভাব হয়েছে কিনা। পাশাপাশি ত্বকে ফোলাভাব বা পরিবর্তন ও কোনো অস্বাভাবিক লালচেভাব আছে কিনা খেয়াল করা।

  • গোসলে সাবান বা বডিওয়াশ ব্যবহারের সময় ত্বকের রংয়ে কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন হচ্ছে কিনা নিয়মিত পরীক্ষা করা।

মনে রাখতে হবে, এই ধরনের ত্বকের পরিবর্তন মানেই যে হৃদরোগ হয়েছে- সেটা কিন্তু নয়। অন্য কারণেও সেসব হতে পারে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় সাবধান হতে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি।

 

__________________________________________________________

 

 

 

__________________________________________________________

_______

 

 

 

 

 

 

 

  

Loading