নিজস্ব প্রতিনিধি – নাগাল্যান্ডকে ফের ছয় মাসের জন্য উপদ্রুত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করল সরকার। ফলে বিতর্কিত সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বা আফস্পা বহাল থাকছে। এই নিয়ে নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে রাজ্যটিতে।
গত ৪ ডিসেম্বর নাগাল্যান্ডের ওটিং গ্রামে ১৪ জন নিরীহ গ্রামবাসী নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারানোর পর আফস্পা বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হন নাগারা। নাগাল্যান্ড ছাড়াও উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আইনি বাতিলের দাবি ওঠে। ১৯৫৮ সালের এই আইনে অসামরিক আইন রক্ষাকারী বাহিনীকে (পুলিশ) উপদ্রুত এলাকায় সাহায্য করার জন্য সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা ও আইনি রক্ষাকবচ দেওয়া হয়।
প্রতি ৬ মাস অন্তর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পুরো রাজ্য বা কিছু এলাকাকে উপদ্রুত বলে ঘোষণা করে আফস্পার সুবিধা তুলে দেয় সেনা বা আধা-সেনার হাতে। আফস্ফা-র ফলে অসামরিক আইনি থেকে মুক্ত থাকেন সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানরা।
ওটিং-এর ঘটনার পর মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশেও আইনটি বিলোপের দাবি ওঠে। নাগাল্যান্ড বিধানসভায় আফস্পা প্রত্যাহারের প্রস্তাব পাস হয়। মুখ্যমন্ত্রী নেফু রিও জানান, কেন্দ্রীয় সরকার আইন বাতিলে কমিটি গঠন করেছে।
এমনকি, ওটিং-এর ঘটনার তদন্তে নিযুক্ত অসামরিক বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট-এর তদন্তে সেদিন গুলি চালানোর ঘটনায় যুক্ত জওয়ানদের হাজির করতেও রাজি হয়েছে সামরিক বাহিনী।
গ্রামবাসীদের দাবি মেনে সাধারণ পোশাকে সামরিক বাহিনীর তদন্তকারীরা ওটিং-এর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আফস্পা প্রত্যাহার নিয়ে নাগাল্যান্ড-সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছিল।
কিন্তু বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, গোটা নাগাল্যান্ডে আরও ৬ মাস বহাল থাকছে আফস্পা। কারণ হিসেবে রাজ্যের হিংসা ও সন্ত্রাস পরিস্থিতির আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।
তবে আফস্পা-র মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সাধারণ নাগাদের মধ্যে। বিভিন্ন নাগা সংগঠন দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছে।