নিজস্ব প্রতিনিধি – লালকেল্লা আমার!’ এমনই দাবি করলেন সুলতানা বেগম নামের এক মহিলা। নিজেকে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের প্রপৌত্রের স্ত্রী দাবি করে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন ওই মহিলা।
তার দাবি, বেআইনিভাবে লালকেল্লার দখল নিয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। যা পরবর্তীতে ভারত সরকারের অধীনে চলে যায়। আদালতকে তিনি জানিয়েছেন, মুঘল সম্রাটের উত্তরসূরীর স্ত্রী হওয়ার দরুন, তার ওই সম্পত্তির উপর অধিকার রয়েছে। যদিও ওই মামলাকে বৈধতা দেয়নি দিল্লির হাইকোর্ট।
মহিলার যাবতীয় দাবি খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি রেখা পল্লি। তিনি জানান, ১৫০ বছর আগের ঘটনা নিয়ে এভাবে আইনি মামলা করা যায় না।
এদিকে অভিযোগকারিণী সুলতানা বেগম জানিয়েছেন, তিনি দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের উত্তরসূরী মহম্মদ বেদার বাখতের স্ত্রী। তার স্বামী ১৯৮০ সালের ২২ মে-তে মারা যান।
এ কথাও জানান সুলতানা। তার দাবি, ব্রিটিশ রাজ চলাকালীন লালকেল্লা জবরদখল করেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি বলেন, ‘ইতিহাস সম্পর্কে খুব বেশি জ্ঞান নেই আমার। কিন্তু, আপনি দাবি করছেন, ১৮৫৭ সালে আপনাদের পরিবারের সঙ্গে অন্যায় হয়েছিল। তাহলে ১৫০ বছর পর প্রতিবাদ জানানোর অর্থ কী? এত বছর ধরে আপনি কী করছিলেন?’
আদালতের সংযোজন, ‘সকলেই জানতেন এই ঘটনার কথা। ভারত সহ সারাবিশ্ব ইতিহাস বই ঘেঁটে জানতে পেরেছে যে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তাহলে ওই ঘটনার সময় আপনাদের পরিবারের তরফ থেকে কোনও আপত্তি জানানো হল না কেন? আপনাদের পূর্বসূরিরা যখন কোনও প্রতিবাদ করেননি, তখন অভিযোগকারিণী কি আদৌ পিটিশন দায়ের করতে পারেন?’
সুলতানা বেগম ওই মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী বিবেক মোরের মাধ্যমে। আইনজীবীর দাবি, মুঘল সম্রাটের পরিবারকে লাঞ্ছিত করেছে ব্রিটিশরা। ১৮৫৭ সালে প্রথমবার যখন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ হল, সে সময় দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং তাকে দিল্লি থেকে নির্বাসিত করা হয়। ওই সময়েই লাল কেল্লার দখল নেয় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।