নিজস্ব প্রতিনিধি – ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলাসহ বিভিন্ন পৌরসভা ও নগর পঞ্চায়েতের ভোটকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্যে চরম নৈরাজ্য চলছে। গণতন্ত্র নেই। তাই গতকাল সোমবার দিল্লিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন তৃণমূল সাংসদরা। পাশাপাশি আগরতলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা মমতা ব্যানার্জির ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জি অভিযোগ করেন, ত্রিপুরায় পুলিশ, আইনজীবী, সাংবাদিক, ডাক্তার, নার্সসহ সব পেশার মানুষই বিজেপির গুন্ডাবাহিনীর হাতে আক্রান্ত। থানার ভেতরে পুলিশকেও মারধর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ থেকে গিয়ে তৃণমূলের নেতারাই অশান্তি ছড়াচ্ছেন।
আগামী ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরায় পৌর নির্বাচন। মূল লড়াই শাসক বিজেপির সঙ্গে বামদের। কিন্তু তৃণমূলও গত তিন-চার মাসে নিজেদের ক্ষমতা বাড়িয়ে লড়াইয়ে নজর কেড়েছে। শহরাঞ্চলের এই ভোটকে ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক অশান্তি। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ যুব তৃণমূলের সভানেত্রী ও অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবারই আগরতলায় ভোট প্রচারের কথা ছিল অভিষেকের। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। সংবাদ সম্মেলন করে অভিষেক অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সরকার গণতন্ত্রকে লুট করেছেন। হিংসার রাজত্ব কায়েম করেছে বিজেপি। কিন্তু রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই তৃণমূল চালিয়ে যাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে, বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্যের অভিযোগ, কোনো রাজনৈতিক অস্তিত্ব নেই তৃণমূলের। তাই নাটক করছেন তৃণমূল নেতারা। এদিকে, সোমবারই দিল্লি গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। দিল্লি যাওয়ার আগে তিনিও ত্রিপুরার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এদিকে গত সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় আর অশান্তি হবে না বলে অমিত শাহ তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বিজেপি ও তৃণমূলের এই লড়াই নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী বলেছেন, অভূতপূর্ব হিংসার রাজনীতি শুরু হয়েছে। এর বিরুদ্ধে মানুষকে সংঘবদ্ধভাবে লড়তে হবে। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি গোপাল রায়ও হিংসার রাজনীতির নিন্দা করেছেন।
এদিকে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে চার সাংবাদিকও জখম হয়েছেন। সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা করেছে আগরতলা প্রেসক্লাব।