শান্তি রায়চৌধুরী : দুবাই যেমনটা হবার কথা এখানেও তেমন। সুউচ্চ ভবনে মোড়ানো স্পোর্টস সিটি, তার ভেতরেই রয়েছে সবুজের গালিচা। অনেকগুলো মাঠ, হকি টার্ফ, লা-লিগা একাডেমি থেকে শুরু করে ক্রীড়ার সকল মঞ্চ এখানে তৈরি।

তার মাঝে অন্যতম আইসিসি একাডেমি। পাশেই অবস্থিত আইসিসির সদরদপ্তর। যেখানে নেওয়া হয় ক্রিকেটের বড় বড় সব সিদ্ধান্ত। ১৯০৯ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আইসিসির দপ্তর ছিল ইংল্যান্ডের লর্ডসে।

তবে যুক্তরাজ্য সরকারের ডাবল ভ্যাট নীতির কারণে মোনাকোতে স্থানান্তর করা হলেও হলেও সব কাজ চালিয়ে নিতে পারছিল না আইসিসি। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই আইসিসির কার্যনির্বাহী পরিষদে ১১-১ ভোটে ২০০৫ সালে আইসিসির সদরদপ্তর নিয়ে আসা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে। এখান থেকেই এখন পরিচালিত হয় বিশ্ব ক্রিকেট।

সদর দপ্তরের ৩৮ হাজার স্কয়ার ফিট লাগোয়া ভবনটির পাশেই ২০০৯ সালে গড়ে তোলা হয়েছে অবস্থিত আইসিসি একাডেমি। আইসিসির সদরদপ্তরে সাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত থাকলেও একাডেমিতে ঘুরে আসতে পারেন যে কেউ। তবে বিশ্বকাপ চলাকালীন এই সময়টায় সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ নিষেধ। যদিও বিশ্বকাপের এক্রেডিটেশন কার্ড দেখানোয় প্রবেশে আর বাধা ছিল না।

সুসজ্জিত গেট দিয়ে ঢুকতেই একাডেমি ভবনের ভেতর ধারণা পাওয়া যায় হাই-পারফরম্যান্স, কোচ এডুকেশন, জুনিয়র ডেভেলপমেন্ট, লিগ অ্যান্ড টুর্নামেন্টস, ক্রিকেট টেকনোলজি, ইউথ ডেভেলপমেন্ট, ইভেন্টস, ইনডোর ক্রিকেট, স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং, টার্ফ ম্যানেজমেন্ট, আম্পায়ার এক্রেডিটেশন, ক্রিকেট বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল টিম ক্যাম্পের সুবিধা সম্বলিত একটি দেয়ালিকা।

এটি পার করে সামনে গেলেই আইসিসি শপ। এই শপের অন্যতম আকর্ষণ দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচের স্মরণিকা। ২০০৯ সালের ২২ এপ্রিল এই মাঠে প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া। দুই দলের ক্রিকেটারদের সাক্ষর সম্বলিত ব্যাটটি এখনও আছে আইসিসি শপে। এখানে পাওয়া যায় ক্রিকেটের অত্যাধুনিক সব সরঞ্জাম।

তবে দেখেই কিনে ফেলার আগ্রহটা চুপসে যাবে আকাশচুম্বী মূল্য দেখে। এখানে থাকা স্যুভিনিরগুলো আপনার মন কাড়বে ঠিকই। এই শপ পার হলেই রয়েছে ইনডোর। যেখানে ৭টি উইকেটে অনুশীলন করতে পারবে অন্তত দুটি দল একসঙ্গে।

এখানে আপনার চোখ আটকে যেতে বাধ্য। শুধু আরব আমিরাতের ক্রিকেটীররাই নয়, দেশ-বিদেশের অনেক ক্রিকেটারই এখানে এসে অনুশীলন করতে পারেন বলে জানিয়েছেন কর্মরত এক ভারতীয়। তিনি জানান, স্বীকৃত ক্রিকেটার হলে বাধা নেই তবে অন্যদের ক্ষেত্রে রয়েছে নিয়ম-কানুন।

ইনডোর পার হতেই যেন ক্রিকেটের স্বর্গরাজ্য। পাশাপাশি দুটি ক্রিকেট মাঠে রয়েছে ৩৮টি অনুশীলনের উইকেট। এই উইকেটের মধ্যে আবার ২৮টি উইকেট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কন্ডিশন অনুযায়ী তৈরি করা।

ফ্লাড লাইটের আলোতেও অনুশীলনের সকল সুবিধা দিয়ে রেখেছে আইসিসি একাডেমি। সত্যিকার অর্থেই আধুনিক ক্রীড়া সুবিধার অপর নাম এই আইসিসি একাডেমি।

ও হ্যা, একাডেমির ভেতরেই রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া। তবে খাবারের দাম দেখলে চোখ কপালে ওঠাটাই স্বাভাবিক। ৮০০ টাকায় খেতে হবে এক প্লেট বিরিয়ানি!

Loading