গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে আদর্শ বাস্তু জমি ও ভূমি পরিক্ষা
বাস্তু আচার্য্য দেবযানী
9051039387
ddebjani63@gmail.com
বর্তমান যুগে বিপুল জনবিষ্ফোরণের ফলে আদর্শ বাসযোগ্য বাস্তুজমি পাওয়া অতিব কষ্টসাধ্য। শহর, শহরতলি, গ্রাম সর্বত্রই একই অবস্থা। আমাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে নিজের সাধ আর সাধ্যকে সামঞ্জস্য করে একটি সুন্দর বাড়ী তৈরী করা।আর এই সুন্দর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য চাই একটি শুভ বাস্তুসম্মত জমি। কিন্তু এই জমি ক্রয় করার আগে জমির আকারগত দিক ও ভূমি পরীক্ষা করে নেওয়া অত্যন্ত আবশ্যক।
বাস্তুতন্ত্র মতে শুভ আকৃতির জমি ঃ
আয়তাকার জমি – গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে এই ধরনের জমি সর্বোৎকৃষ্ট । এই জমির মাপ চওড়া ও লম্বা দিকের অনুপাত ১ : ২ হওয়া উচিত। গৃহস্বামীর জন্য অত্যন্ত শুভ এই জমি।
বর্গাকার জমি – বর্গাকার জমির চারটি দিক সমান মাপের ও চারটি কোণ ৯০ ডিগ্রী। এই প্রকার জমির উপর গৃহ নির্মাণ করলে জীবনে উন্নতি ও সমৃদ্ধি আসে।
সামন্তরিক আকৃতির জমি – এই ধরণের জমির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সমান্তরাল। এই জমি গৃহ নির্মাণের জন্য শুভ।
গোমুখাকৃত জমি – এই প্রকার জমির সামনের ভাগ সরু এবং পিছনের ভাগ চওড়া। এই জমি ব্যবসার ক্ষেত্রে অশুভ হলেও বসবাসের ক্ষেত্রে শুভ।
বাস্তুশাস্ত্র মতে অশুভ আকৃতির জমি
পঞ্চমুখী জমি – পাঁচ কোণা বিশিষ্ট জমি অত্যন্ত অশুভ। এই প্রকার জমিতে গৃহ নির্মাণ করলে বসবাসকারীদের স্বাস্থ্যহানি ও অর্থকষ্টের মধ্যে সারা জীবন কাটাতে হয়।
বৃত্তাকার জমি – এই ধরনের জমিতে গৃহনির্মাণ বাড়ির গৃহকর্তার জন্য অশুভ ফলদায়ক।
ডিম্বাকৃতি জমি – বাসগৃহ নির্মাণের জন্য ডিম্বাকৃতি জমি অত্যন্ত অশুভ। এর জন্য গৃহস্বামীকে সারা জীবন অর্থকষ্টে থাকতে হয়।
ব্যঞ্জনাকৃতি জমি – ব্যাঞ্জনাকৃতি অর্থাৎ হাত পাখার মত আকৃতির জমিতে গৃহ নির্মাণ করলে, বসবাসকারীদের সারা জীবন দারিদ্র্যতা ও স্বাস্থ্যহানীর আশঙ্কা থাকে।
অর্ধচন্দ্রাকার জমি – এই রূপ জীমতে গৃহ নির্মাণ করলে গৃহকর্তাকে চোরের ভয়ে ও শত্রুর ভয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হয়।
ভূমির প্রকারভেদ ও পরীক্ষা-
(১) গজপৃষ্ঠ ভূমি (২) কূর্মপৃষ্ঠ ভূমি (৩) দৈত্যপৃষ্ঠ ভূমি (৪) নাগপৃষ্ঠ ভূমি।
গজপৃষ্ঠ ও কূর্মপৃষ্ঠ ভূমি গৃহনির্মাণের জন্য অত্যন্ত শুভ। দৈত্যপৃষ্ঠ ও নাগপৃষ্ঠ ভূমি গৃহনির্মাণের জন্য অত্যন্ত শুভ।
বিশ্বকর্মার বচনানুসারে, যে ভূমিতে গৃহনির্মাণ হবে, সেই ভূমিতে কোনো এক জায়গায় লম্বা-চওড়া একটি গর্ত করে আবার ওই মাটি দিয়েই পুনরায় গর্তটি ভরাট করতে হবে। যদি গর্তটি ভরাট হয়ে কিছু মাটি বৃদ্ধি পায় সেই জমি গৃহনির্মাণের জন্য শুভ ফলদায়ক।আর যদি গর্তটি মাটি দিয়ে ভরাট করার পর মাটি বৃদ্ধি না পায় বা মাটি কম হয় তবে সেই জমি গৃহ নির্মাণের জন্য অশুভ বলে গণ্য হয়।
বাস্তুভূমি পরীক্ষণ করার সময় মাটি পরীক্ষাও করা উচিত। মাটি পরীক্ষা করার সময় খোদাই করা মাটির সঙ্গে যদি ইট, পাথরের টুকরো, তামার টুকরো পাওয়া যায় তা অত্যন্ত শুভ। ওপর দিকে খোদাই করা মাটির সাথে যদি পিপিলিকা, নাগ, উইপোকা, মাথার খুলি, অর্ধদগ্ধ কাঠের টুকরো ইত্যাদি পাওয়া যায় তবে সেই জমি অত্যন্ত অশুভ সূচক হবে।
এই পৃথিবী পঞ্চভূতাত্মক। এতে ক্ষিতি, অপ্, তেজ, মরুৎ, ব্যোম – এই পাঁচটি তত্ত্বের সমাবেশ ঘটেছে। একই ভাবে মানব শরীরেও এই পাঁচটি তত্ত্বের মিশ্রণ ঘটেছে।পৃথিবীর যেকোনো নির্মাণ এই পাঁচটি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে। প্রকৃতির এই পঞ্চভূতাত্মক ব্যবস্থাকে ব্যহত না করে, প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা যদি গৃহ নির্মাণ করি তাহলে গৃহের সকল সদস্যদের ভিতর পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় ও মধুর হবে এবং জীবন অতিবাহিত হবে অপার সুখ ও শান্তিতে।
সকলকে শুভ দীপাবলির শুভ কামণা জানিয়ে লেখা শেষ করলাম।
………….
ব্যবসাতে রোজগার বৃদ্ধির টোটকা
(১) ব্যবসাতে রোজগার বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক শুক্রবার সকাল সন্ধ্যায় মাতা লক্ষ্মীর পূজা করতে হবে। আর একটি সুপারি মায়ের চরণে রেখে দিতে হবে। এই উপাচারটি পরপর ৭টি শুক্রবার করতে হবে। ৭টি শুক্রবার হওয়ার পর ৭টি সুপারি একটি লাল কাপড়ে বেঁধে দোকানের পূর্ব বা দক্ষিণ দিকে বেঁধে দিতে হবে। এতে দোকানের গ্রাহক বৃদ্ধি হবে।
(২) সপ্তাহে যেকোনো দিন একবার দোকানের যেকোনো সামগ্রী বা পয়সা কোন গরীবকে দান করতে হবে। যত দান করতে পারবেন তার শতগুণ মাতা লক্ষ্মী আপনাকে ফেরত দেবেন।