ধৃতিমান বড়ুয়া (বিশেষ প্রতিনিধি)  – গুয়াহাটি আসামের প্রাণকেন্দ্র। আর এই প্রাণ কেন্দ্রে রয়েছে তন্ত্র-মন্ত্রের কিছু স্থান হিসেবে কামরূপ কামাখ্যার মন্দির । ৫১ পীঠের অন্যতম পিঠ কামরূপ কামাখ্যার মন্দির । হিন্দুদের তীর্থ ক্ষেত্র । গোহাটি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নীলাচল পাহাড়ে অবস্থান করছে হিন্দুদের এই পবিত্র তীর্থস্থানটি।  আর এরই অদূরে বয়ে চলেছে বঙ্গ পুত্র নদী । এই দুইয়ের মিলনে পর্যটকদের কাছে কামরূপ কামাখ্যার রূপ আরো আকর্ষন বাড়িয়েছে।  কথিত  আছে , বিষ্ণুর চক্রে খন্ডিত সতীর যোনিদেশ নীলাচল পর্বতে পতিত হয়ে প্রস্তরীভূত হয়েছিল । কিংবদন্তি অনুসারে দেবী এখানে তার চরিতার্থ করার জন্য মহাদেবের সঙ্গে মিলিত হতেন বলে এই স্থানের নাম দেওয়া হয়েছে কামাখ্যা দেবী। কালী এখানে শত রূপে পূজিত হয়ে থাকেন। সারা জুড়ে রয়েছে কারুকার্য ও নানান দেবদেবীর মূর্তি। কামাখ্যা পাহাড়ের উচ্চতম শিখরে অধিষ্ঠিত দেবী ভুবনেশ্বরী মন্দির। কামাখ্যা মন্দির থেকে ৬৫ ফুট উচ্চতায় রয়েছে এই মন্দিরটি । এখানে দেবীমূর্তি লাল পাথরের এবং ফুলের সাজে সজ্জিত । এখান থেকে শহরের ও ব্রহ্মপুত্র সূর্যাস্তের দৃশ্য মনোরম।  কামাখ্যা বাস স্ট্যান্ড ১০/১৫ মিনিটের পথ ভুবনেশ্বর দেবীর মন্দির। গুয়াহাটি শহর থেকে তিন কিঃমিঃ দূরে চিত্রালয় পাহাড়ের পশ্চিম দিকে রয়েছে নবগ্রহ মন্দির। গুয়াহাটি বাস স্ট্যান্ড থেকে ১২ কিমি দূরত্বে দক্ষিণ-পূর্বে সন্ধ্যাচল পাহাড়ে গিয়ে দেখে আসুন বশিষ্ঠ আশ্রম টি। শহর থেকে ২৫ কিমি দূরে অবস্থান করছে হিন্দু-বৌদ্ধ মুসলিম তীর্থ হাজোও। এখানকার মুসলিমদের কাছে হাজো এক পবিত্র তীর্থ। এখান থেকে ৯৩ ধাপ সিঁড়ি বেয়ে ৩০০ ফুট পাহাড় চূড়ায় রয়েছে ১৫০০ বছরের হয়গ্রীবা মাধবের মন্দির। এখানে মূল দেবতা হলেন বিষ্ণু। এর ই অল্প দূরে রয়েছে কেদারেশ্বর কমলেশ্বর কামেশ্বর, গণেশ মন্দির।  তাই লোকে পঞ্চতীর্থ ও বলে হাজোকে। আসাম তীর্থের আর এক মনোরম আকর্ষণ মদন কামদেব মন্দির।শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে শাল সেগুন এর ছাওয়ায় এক টিলায় কামরূপের খাজুরাহোমদন কামদেব। ২৫টির বেশি মন্দির রয়েছে এই পাহাড়টি টিলায়। এককথায় মন্দির নগরী ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় অনন্য সুন্দর প্রকৃতির মাঝে পাঁচ ভাগে গড়ে উঠেছে মদন কামদেব মন্দির। সুন্দর ভাস্কর্য ও কারুকার্য রয়েছে প্রতিটি মন্দিরের মধ্যে । শিব ও পার্বতী এখানকার মূল দেবতা।

কিভাবে যাবেন:

হাওড়া থেকে গুয়াহাটি যাওয়ার ভালো ট্রেন কামরুপ এক্সপ্রেস, প্রতিদিন যাচ্ছে। সরাইঘাট এক্সপ্রেস তিরুবনন্তপুরম এক্সপ্রেস শিয়ালদা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস । এছাড়া গৌহাটির  সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশনের  যোগাযোগ রয়েছে। সড়কপথে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে যোগাযোগ আছে গোহাটির। দূরত্ব ছিল ১০৩ কিমি, সময় 3 ঘণ্টা।

কলকাতাসহ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহর গুলির সঙ্গে বিমান যোগাযোগ রয়েছে গোহাটির। কলকাতা থেকে এক ঘন্টা ১০ মিনিটে বিমান যাচ্ছে গোহাটি।

কোথায় থাকবেন:

গৌহাটি রেল স্টেশনের ওভার ব্রিজের সামনে বাস স্ট্যান্ডের ডানহাতি ও বামহাতি দুদিকেই প্রচুর হোটেল লজ গড়ে উঠেছে । এছাড়া সারা গৌহাটি শহর জুড়েই রয়েছে অসংখ্য হোটেল ও লজ।হোটেল রেট মোটামুটি ৫০০ টাকার মধ্যে । স্টেশন রোডে পড়বে অসম পর্যটনের প্রশান্তি টুরিস্ট লজ।

কলকাতা যোগাযোগ:

টুরিস্ট ইনফর্মেশন অফিস গভর্মেন্ট অফ আসাম ,৮ নম্বর রাসেল স্ট্রীট , কলকাতা -৭১।

Website:www.assamtorism.০rg

জেনে রাখুন:

বেড়াবার মরশুম – অক্টোবর থেকে এপ্রিল । বর্ষাকাল মে মাসের শেষ থেকে সেপ্টেম্বর। তবে সারা বছরই আসামে বেড়ানো যায়।

কন্ডাক্টেড ট্যুর:

নিয়মিত সাইট সিন অসম পর্যটন করে না । সিজিনে পর্যটন বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থার পরিচালনায় কিছু ট্যুর করা হয়।

গৌহাটি দর্শন:

প্রতিদিন সকাল ৭.৩০ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত করানো হয় কামাখ্যা ভুবনেশ্বরী মন্দির উমানন্দ মন্দির।

সাজু দর্শন:

গুয়াহাটি থেকে সারা দিনের প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা আছে। সেই সঙ্গে মদন কামদেব দর্শন ও করানো হয়।

ট্রাভেলার্স পমেন্ট, আসাম টুরিস্ট কমপ্লেক্স , স্টেশন রোড, গুয়াহাটি । এই সংস্থাটি রাজ্য পর্যটন অনুমোদিত ।এরা শহর ঘোরানোর ব্যবস্থা করে।

Loading