নিজস্ব প্রতিনিধি – ভারতে এবার ১০০টি মাদরাসায় পড়ানো হবে হিন্দু ধর্মের ভাগবত গীতা ও রামায়ণ। ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং’-এর (এনআইওএস) অন্তর্গত মাদরাসাগুলোতে অন্তর্ভুক্ত হবে প্রাচীন ভারতীয় দর্শন এবং ঐতিহ্য নিয়ে পাঠ্যক্রম। মঙ্গলবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে এই পাঠ্যক্রম উন্মোচন করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়াল।

মোদি সরকারের নতুন শিক্ষানীতি মেনেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এনআইওএস-এর চেয়ারম্যান সরোজ শর্মা জানিয়েছেন, আপাতত ১০০টি মাদরাসায় তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে থাকছে গীতা-রামায়ণ। ভবিষ্যতে ৫০০টি মাদরাসায় চালু হবে এই বিষয়ে পাঠদান। বর্তমানে ‘ভারতীয় জ্ঞান পরম্পরা’র উপর ১৫টি কোর্স তৈরি করা হয়েছে। এতে বেদ, যোগ, বিজ্ঞান, রামায়ণ ও মহাভারতের মতো মহাকাব্যের বিষয়ে পাঠ থাকবে। প্রসঙ্গত, ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং’ একটি স্বয়ংশাসিত প্রতিষ্ঠান হলেও শিক্ষামন্ত্রণালয়ে অধীনস্থ সেটি।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জুলাই মাসে প্রায় ৩৪ বছর পর বদল আসে ভারতের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে। এক সাংবাদিক সম্মেলন করে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করা হয়। নতুন নীতিতে শিক্ষার অধিকারের আওতায় আনা হয়েছে ৩ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি বদল ঘটানো হয়েছে পরীক্ষা ব্যবস্থায়। এমনকী আমূল বদলে গিয়েছে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাও। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের নাম বদলে হয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। স্বাধীনতার পর থেকে এই নামেই পরিচিত ছিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে গুরুত্বহীন দশম বা দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের মুখস্থ বিদ্যার বদলে হাতেকলমে শিক্ষায় জোর দেয়া হবে। প্রতিবছরের বদলে তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। দশম শ্রেণির পর কলা বিভাগ, বিজ্ঞান বিভাগ বা বাণিজ্য বিভাগের তফাৎ উঠে যাচ্ছে। পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়লেও, পাঠ্যক্রমে থাকতে পারে সংগীত। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন নিয়ে পড়লেও, ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়ার সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। যদিও বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, নতুন নীতিতে শিক্ষাব্যবস্থা কুক্ষিগত করেছে মোদি সরকার।

Loading