শান্তি রায়চৌধুরী: ২০১২ সালের পর এই প্রথম আইসিসি ইভেন্টের নক আউটে যেতে না পাওয়ার নেপথ্যে যে সব কারণ রয়েছে তা ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে বিসিসিআই।
এখন বিসিসিআই অপেক্ষা করছে নির্বাচকমণ্ডলী ও টিম ম্যানেজমেন্টের রিপোর্টের উপর। তবে রিপোর্ট পেশের আগে হার্দিক পাণ্ডিয়া ও বরুণ চক্রবর্তী পুরো ফিট না থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের দলে রাখা হল তার নিয়েই জোরালো বিতর্ক শুরু হয়েছে।

হার্দিক-বরুণদের দলের নির্বাচন করা নিয়ে:

হার্দিক পাণ্ডিয়া ও বরুণ চক্রবর্তীকে দলে রাখা হল কী কারণে তা নিয়ে জোর ঝড় উঠেছে বিসিসিআইয়ের অন্দরে। হার্দিককে যখন বিশ্বকাপের দলে রেখেছিলেন নির্বাচকরা তখন তাঁরা বলেছিলেন, আইপিএলে তিনি বোলিং করবেন। কিন্তু আইপিএল তো বটেই, টি ২০ বিশ্বকাপের সময়ও দেখা গিয়েছে অলরাউন্ডার হিসেবে হার্দিক ফিট নন। প্রবল সমালোচনার মুখে নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তান ম্যাচে তাঁকে দিয়ে লোকদেখানো বোলিং করানো হলেও উইকেট পাননি। বরুণ চক্রবর্তীও একই জায়গায় জায়গায়।আইপিএল চলাকালীনই বরুণের চোটের কারণ জানা গিয়েছিল। তারপরও তাকে
খেলানো হল বিশ্বকাপে! আসলে নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্ট এই দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে জুয়া খেলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত ব্যুমেরাং হয়। হার্দিককে ব্যাটার হিসেবে খেলানোয় দলের ভারসাম্যই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। হার্দিক বা বরুণের জায়গায় বিকল্প ক্রিকেটার নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু তা কেন নির্বাচক বা টিম ম্যানেজমেন্ট করেনি। সে ব্যাপারে বোর্ড রিপোর্ট তলব করেছে।

ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে না পারা:

আইসিসি ইভেন্টে ভারতীয় দল ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারছে না বেশ কয়েক বছর ধরেই। আর সে কারণেই বিরাটদের সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসির হুসেন। আসলে ভারতের প্ল্যান বি তৈরি ছিল না। বিরাট কোহলিও স্বীকার করেছেন, যে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার দরকার ছিল তা প্রথম দুটি ম্যাচে আমরা করতে পারিনি।বিশ্বকাপে এসে অধিনায়কের মুখে এই ধরনের কথা কেন? এ নিয়ে তদন্ত করতে চায় বিসিসিআই।

ক্লান্তির অজুহাত:

জসপ্রীত বুমরাহ ও বিদায়ী বোলিং কোচ ভরত অরুণ টি ২০ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জন্য ক্লান্তিকে দায়ী করেছেন। বুমরাহ বলেছিলেন টানা ক্রিকেট খেলায় জৈব সুরক্ষা বলয়ের ক্লান্তির কথা। সেই কথার রেশ ধরে ভরত অরুণ গতকাল বলেন, টি ২০ বিশ্বকাপ ও আইপিএলের মধ্যে ছোটো বিরতি পাওয়া গেলে তা দলের পক্ষে ভালো হতো। অরুণ ও বুমরাহ-র কথাকে ভালোভাবে নেননি বোর্ডকর্তারা। তাঁদের পাল্টা যুক্তি, কাউকেই আইপিএল খেলার জন্য জোরাজুরি করা হয়নি। বুমরাহ বা বিরাট যদি বিশ্বকাপকে গুরুত্ব দিতেন, তাহলে তাঁরা আইপিএল থেকে সরে দাঁড়াতেই পারতেন। বিসিসিআই ক্রিকেটারদের স্বার্থে সব ব্যবস্থা করেছে। পরিবারকেও সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইপিএলের দলকেই বলা হয়েছিল ভারতের বিশ্বকাপের দলে থাকা ক্রিকেটারদের বুঝেশুনে ব্যবহার করতে। কিন্তু সেটাও করা হয়নি। তাছাড়া হার্দিকের যখন চোট ছিল তাঁকে এনসিএতে রেখে ফিট করা উচিত, আইপিএল খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে পাঠানোও উচিত হয়নি। ক্লান্তির প্রসঙ্গে এক বোর্ডকর্তা বলেছেন, আইপিএলের পরও এক সপ্তাহ সময় পেয়েছিল ভারত পাকিস্তান ম্যাচের আগে। তার পরেও এক সপ্তাহ পায়। ফলে ক্লান্তি কোনও কারণ হতে পারে না। বরং শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ কম সময়ে অনেক ম্যাচ খেলেছে।

Loading