নিজস্ব প্রতিনিধি – পশ্চিমবঙ্গে কমে এসেছে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার। টিকা দেওয়ার অগ্রগতিও বেশ ভালো। তবে সামনের দিনগুলোতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে, এমন আশঙ্কা বাদ দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। এরই প্রেক্ষাপটে রাজ্যটিতে আংশিক লকডাউনের মেয়াদ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।  শনিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গ সচিবালয় নবান্ন থেকে এক নির্দেশনায় আংশিক লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা জানানো হয়। আগের ঘোষণা অনুযায়ী, লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি মাসের ৩১ তারিখে। নবান্নের নির্দেশনায় বলা হয়, আংশিক লকডাউন চলাকালে স্থানীয় সময় রাত ১১টা থেকে ভোররাত ৫টা পর্যন্ত বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হতে পারবে না কেউ। এই নিয়ম ভঙ্গ করলে ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, লকডাউন চলাকালে গণপরিবহন চালু থাকলেও লোকাল ট্রেন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকছে। তবে মেট্রোরেল যথারীতি করোনা নিয়ন্ত্রণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু থাকবে। প্রতিটি বাসে ‘মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ’ লেখা স্টিকার লাগাতে হবে। হাটবাজার ও শপিং মলেও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ৫০ শতাংশ আসন খালি রেখে খোলা রাখা যাবে কোচিং সেন্টারগুলো। সরকারি ও বেসরকারি অফিসও ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে চালু থাকবে। আইটি–সংশ্লিষ্ট সব অফিস পূর্ণ কর্মী নিয়ে চালু করা যাবে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। হাটবাজার ও কাঁচাবাজার খোলা রাখা যাবে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। অন্যান্য দোকানপাট খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে শপিং মল। পারলার ও সেলুন খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আর বার ও রেস্তোরাঁ দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে আংশিক লকডাউন চলাকালে রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। জিম খোলা যাবে ৫০ শতাংশ আসন নিয়ে। সিনেমা হল ও স্টেডিয়ামে ৫০ শতাংশ দর্শক আসন খালি রেখে চালু করা যাবে। টিকা নেওয়া থাকলে সকালে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের ঢুকতে দেওয়া হবে পার্কে। এ সময় চালু থাকবে হোম ডেলিভারি, অনলাইন পরিষেবা ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিষেবা। খোলা থাকবে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর দোকান। এদিকে রাজ্যজুড়ে দ্রুততার সঙ্গে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি চলছে। এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৩১ হাজার ৮৮৮ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার এক দিনে টিকা দেওয়া হয়েছে ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৩১৯ জনকে। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তরের শনিবারের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যটিতে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৬৬১ জন। একই সময়ে মারা গেছেন সাতজন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৬৮ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণের হার ছিল ১ দশমিক ৭১ এবং মৃত্যুহার ছিল ১ দশমিক ১৯।

Loading