নিজস্ব প্রতিনিধি- পশ্চিমবঙ্গে ‘নন্দীগ্রাম’ আসনের দিকে চোখ থাকবে পশ্চিমবঙ্গে ভোটের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। রাজ্যে এবারে ভোট হবে আট দফায়।

আগামী ২৭ মার্চ ৩০টি আসনে প্রথম দফার ভোট। তার আগে শাসকবিরোধী সব পক্ষই প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করতে ব্যস্ত। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে শুক্রবার (৫ মার্চ) দুপুরে কালীঘাটে মমতার বাসভবনের অফিস থেকে একযোগে রাজ্যের ২৯৪টি কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গেছে, এ বার বেছে নেওয়ার কারণ শুক্রবার দিনটি তৃণমুল সুপ্রিমোর পয়া দিন বলে। একুশের নির্বাচন মমতার কাছে প্রেস্টিজ ফাইট। তাই দলের প্রার্থী তালিকায় এবার চমক থাকার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

গত কয়েকদিনে বিনোদন জগত ও খেলার জগতের বহু তারকা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাদের রাজনীতির পাঠ দিতে ইতোমধ্যে ক্লাসও শুরু করেছে শাসক দল। তাদের মধ্যেই বেশ কয়েকজনকে জোড়া-ফুলের হয়ে ভোটের লড়াইয়ে দেখা যাবে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। অন্যদিকে, জানা গেছে এবার ভোটে ৮০ বছরের বেশি বয়সী ও এলাকায় জনপ্রিয় নন, এমন কাউকে প্রার্থী করা হবে না। ফলে বাদ যেতে পারে একাধিক বিদায়ী বিধায়ক।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো প্রথম প্রার্থী তালিকায় নাম থাকতে পারে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কারণ তিনি আগেই ঘোষণা করেছিলেন, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হতে চান তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১১ মার্চ, নন্দীগ্রাম আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ২৯৪টি আসনের মধ্যে নন্দীগ্রাম আসনের দিকে বিশেষ নজর থাকবে গোটা ভারতের। কারণ এই আসন থেকে বিজেপির প্রার্থী হতে পারেন সদ্য তৃণমুল ত্যাগী শুভেন্দু অধিকারীক। তিনি শুধু তৃণমূল ত্যাগী নন, একসময় মমতার অতিঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এর সঙ্গে নন্দীগ্রামকে শুভেন্দু হাতের তালুর মতো চেনেন। কারণ তৃনমূলে থাকাকালীন পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমুলের হয়ে ভোট করাতেন তিনি।

এছাড়া, এ আসনের দিকে নজর থাকার কারণ বিজেপিতে যোগদানের পর শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, নন্দীগ্রামে মমতাকে অন্তত ৫০ হাজার ভোটে হারাবেন।

একইসঙ্গে, নন্দীগ্রাম আসন বাম-কংগ্রেস জোট তাদের নতুন সঙ্গী আইএসএফকে ছেড়ে দিতে পারে। আইএসএফ অর্থাৎ ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট’। যা ফুরফুরা শরিফের পীড়জাদা আব্বাস সিদ্দিকির দল। বামজোট তাকে সমর্থন করার কারণ নন্দীগ্রাম আসনে মুসলিম সংখ্যালঘু সংখ্যাই বেশি এবং আব্বাসপ্রেমী সংখ্যাও কম নয় নন্দীগ্রামে। একদিকে মমতার মত লড়াকু নেত্রী, অন্যদিকে শুভেন্দু হুঙ্কার এবং আব্বাসের মমতাবিরোধী হয়ে ওঠা। ফলে সবচেয়ে হাইভোল্টেজ নির্বাচন হতে চলেছে আগামী ২৭ মার্চ। কে হাসবে শেষ হাসি, তা ২ মে ভোট গণনার দিনই বোঝা যাবে। তবে এসব অনুমান করা, কারণ কোনো দলই এখনও প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেনি।

Loading