কালসর্প যোগ থেকে মুক্তির উপায়

পন্ডিত শ্রী অমর চক্রবর্তী

৩, নং মেহের আলী মন্ডল স্ট্রীট (মোমিনপুর)

(শিতলা মন্দিররের কাছে, দূর্গাপুজো যেখানে হয়)

কলকাতা – ৭০০০২৭

যোগাযোগ – 9748512684 / 9123387065

বর্তমান পৃথিবীতে মানুষের জীবন দুঃখ, কষ্ট, জ্বরাব্যধী, শোক, নিরাশায় আচ্ছন্ন মানুষ এই সব পরিস্থিতি থেকে একটু শান্তি পেতে মরিয়া জীবনের এই সমস্যার পিছনে রয়েছে গ্রহনক্ষত্রের অদৃশ্য কারসাজি এইসব সমস্যার সমাধানের হালহদিশ নিয়েই২৪ ঘন্টা খাসখবর.কম’- ধারাবাবিকভাবে কলম ধরলেন বহু সম্মানে ভূষিত, সুলেখক প্রখ্যাত জ্যোতিষ, তান্ত্রিক, বাস্তুবিদ, হস্তরেখাবিদ শ্রীযুক্ত অমর চক্রবর্তী মহাশয়    

 

বর্তমান সমাজে মানুষের জীবনে যে সমস্ত সমস্যা দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে কর্মহীনতা, শত্রুতা, গৃহে অশান্তি, বিবাহ বিচ্ছেদ, কোর্ট কাছারি, দাম্পত্য কলহ, জায়গাজমি, লেখাপড়া, গ্রহ নক্ষত্র, কালসর্পযোগ ইত্যাদি। তাদের মধ্যে কালসর্পযোগ অন্যতম। অনেকের মনে কালসর্প যোগ সম্বন্ধে ভুল ধারণা বা ভীতি আছে। কারো কারো জীবনে কালসর্পযোগ আর্শীবাদ হয়ে আসে, আবার কারো জীবনে অভিশাপ হয়ে আসে। কখনো আর্শীবাদ, কখনো অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। সেটা নির্ভর করে আমাদের জন্মকুন্ডলী থেকে। সুতরাং আমাদের জন্মকুন্ডলীতে কি ধরনের কালসর্পযোগ আছে সেটা আমাদের প্রথমে জানতে হবে। এর সুফল ও কুফল সম্বন্ধে আমাদের জানা দরকার। এর থেকে কি ভাবে আমরা মুক্তি পাব সেটা জানতে হবে। সেগুলি আমি নিচে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।

জন্মগুন্ডলিতে যখন সমগ্র গ্রহ রাহু এবং কেতুর মধ্যে যেকোনো একদিকে থাকে তবে এইরূপ অবস্থাকে কালসর্পযোগ বলা হয়। জাতক বা জাতিকার জন্মকুন্ডলিতে কালসর্প যোগ থাকলে সেই ব্যক্তির জীবন বিষণ্ণতায় ভরে ওঠে। জাতক বা জাতিকার সামাজিক বা পারিবারিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে এটির প্রভাব পড়ে এবং জাতক নানারকম কষ্ট, দুের্ভাগের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করে। পর্যাপ্ত পরিশ্রম সত্ত্বেও মনোবাসনা সফল হয় না। এছাড়া কালসর্প যোগে ভাগ্যোদয়ে বাধা, সন্তান সুখে বাধা, গৃহে কলহ, ধন প্রাপ্তিতে বাধা, কাজে মন না লাগা, সাপের স্বপ্ন দেখা, ভয় পাওয়া, পরিশ্রমের ফল না পাওয়া ইত্যাদি হয়। এই ধরণের মানুষের জীবন সংঘর্ষময় ও হতাশাজনক হয়। রাহু-কেতুর স্থিতি হিসাবে দ্বাদশ প্রকার কালসর্প হয়। জাতক-জাতিকার কুন্ডলিতে কোনো কালসর্প যোগ আছে তা জানার জন্য আপনার জন্ম সময়, জন্ম তারিখ, এবং জন্মস্থান জানা প্রয়োজন। সেটা থেকে জ্যোতিষিগণ বুঝতে পারেন আপনার কি ধরণের কালসর্প যোগ আছে। জ্যোতিষ শাস্ত্রে ১২ প্রকারের কালসর্প যোগের উল্লেখ আছে। সেগুলো আমরা আলোচনা করব।

(১) অনন্ত কালসর্প যোগ : প্রথমভাবে রাহু ও সপ্তমভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সব গ্রহ রাহু-কেতুর বাঁদিকে স্থিত হলে এই প্রকার যোগকে কালসর্প যোগের অনন্ত কালসর্প যোগ বলে। একে বিপরীত কালসর্প যোগও বলা হয়। বিপরীত কালসর্পযোগের প্রথম অবস্থায় ব্যক্তির আকস্মিক আর্থিক লাভও হতে পারে। এটি উত্তম রাজযোগের পরিস্থিতি তৈরি করে। তবে জাতকের বৈবাহিক জীবন সুখকর হয় না এবং জাতকের অধঃপতন ঘটে। এই যোগযুক্ত জাতকের জীবনে অনেক অপযশ আসে। কিন্তু মকর লগ্ন হলে এবং অন্যান্য গ্রহের স্থিতি ভালো হলে এই ধরনের জাতকের জীবনে নানা ধরণের শুভ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

() কুলিক কালসর্প যোগ : দ্বিতীয়ভাবে রাহু ও অষ্টমভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সব গ্রহ রাহু-কেতুর বঁাদিকে স্থিত হলে এই প্রকার যোগকে ‘কুলিক কালসর্পযোগ’ বলা হয়। এই যোগে জাতকের স্বাস্থ্য হানী ঘটে। বিভিন্ন জটিল রোগাক্রান্ত হয়। জাতক-জাতিকা সবসময় দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকেন। অকারণে অর্থব্যয় হয়। তবে জাতক-জাতিকার কর্ম  স্থিতি থাকে এবং ব্যবসায় কাঙ্খিত সফলতা ও সম্মান প্রাপ্তি ঘটে। জাতকের জীবনের উত্তরার্ধ ক্লেশময় হয়। আথির্ক অভাব অনটনের মধ্যে জীবনপাত হয়। বৃষ লগ্ন হলে এবং অন্যান্য গ্রহের স্থিতি ভালো হলে জাতক-জাতিকার কাছে প্রচূর অর্থপ্রাপ্তি ঘটে।

() বাসুকি কালসর্প যোগ :  তৃতীয়ভাবে রাহু এবং নবমভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সব গ্রহ রাহু-কেতুর বাঁদিকে

 স্থিত হলে এই প্রকার যোগকে ‘বাসুকি কালসর্পযোগ’ বলে। এই ধরনের জাতক-জাতিকা পারিবারিক কষ্ট ভোগ করে এবং চাকরী ও ব্যবসার ক্ষেত্রে বাধা আসে। রাজকীয় সেবার সুযোগও প্রাপ্ত হয় এবং বৈবাহিক সুখও নষ্ট হতে পারে। কিন্তু মেষ লগ্ন হলে এবং অন্য গ্রহগুলির স্থিতি ঠিক থাকলে জাতক-জাতিকার জীবন সাফল্যমন্ডিত হয়। এবং উন্নতির সুযোগ প্রাপ্ত হয়।

() শঙ্খপাল কালসর্প যোগ :  চতুর্থভাবে রাহু এবং দশমভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সব গ্রহ রাহু কেতুর মধ্যে বিদ্যমান হলে এই ধরনের যোগকে শঙ্খপাল কালসর্প যোগ বলে। এই ধরনের জাতক-জতিকা কাজে ব্যর্থতার চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে। অনেকগুলি কাজ একসঙ্গে করার জন্য কোনও কাজই সম্পূর্ণ করতে পারে না। কিন্তু ধনু লগ্নে থাকলে এবং অন্য গ্রহের অবস্থান সঠিক থাকলে জাতক-জাতিকা জীবনে সফলতা পায়। মধ্য জীবন পর্যন্ত ধন ও সুস্বাস্থের অধিকারি হয়। ব্যবসা, চাকরি ও রাজনীতিতে সফলতা পায়। কিছুকিছু পরিস্থতিতে দেখা যায় যে জাতকের পারিবারিক সুখ বিঘ্নিত হয়।

() পদ্মকালসর্প যোগ :  পঞ্চমভাবে রাহু এবং একাদশভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সমস্ত গ্রহ কেতুর নিচের দিকে স্থিত হলে এই ধরনের যোগকে পদ্মকালসর্প যোগ বলে। এই রকম জাতকের সন্তান সুখ হয় না। প্রায়শই সন্তান থেকে দূরে থাকতে হয়। জাতক দ্বারা সংরক্ষিত সম্পত্তি অন্য লোকের হাতে চলে যায়। মিত্ররা স্বার্থপর হয়। দীর্ঘকাল রোগাক্রান্ত হন। বৃদ্ধ বয়সে সন্ন্যাসের প্রতি প্রবৃত্তি হওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা থাকে। জাতক-জাতিকার মিত্ররাই তার পতনের কারণ হয়। মেষ বা বৃশ্চিক লগ্ন হলে এবং অন্য গ্রহের স্থিতি ভালো থাকলে জাতক-জাতিকা রাজনীতিতে সফল হয়।

() মহাপদ্ম কালসর্প যোগ :  ষষ্ঠভাবে রাহু এবং দ্বাদশভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সমস্ত গ্রহ রাহু-কেতুর ডানদিকে বিদ্যমান হলে তাকে ‘মহাপদ্ম কালসর্প যোগ’ বলে। এ ধরনের জাতক-জাতিকা নিরাশাবাদী ও শত্রুভাবাপন্ন হন। এদের প্রেম সফলতা প্রাপ্ত হয় না। জাতক-জাতিকা রাজদন্ডের ভাগীদার হন। তার জীবন শত্রু পরিবৃত হয়। কারাবাসের যোগ দেখা যায়। এই যোগ দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের কখনো স্থলসেনাতে যাওয়া উচিত নয়। যদি মকর লগ্ন হয় এবং অন্য গ্রহের স্থিতি ভালো হয়, তবে জাতক-জাতিকা দক্ষ দলিল দস্তাবজ লেখায় পারদর্শী হন। ওকালতি ও রাজনীতিতে সফলতা পায়।

() তক্ষক কালসর্প যোগ :   সপ্তমভাবে রাহু, প্রথমভাবে কেতু অবস্থান করলে বাকি সমস্ত গ্রহ রাহু-কেতুর ডানদিকে স্থিত হলে একে ‘তক্ষক কালসর্পযোগ’ বলে। এরকম জাতক-জাতিকা লোভী প্রকৃতির হয় এবং লটারি, জুয়া, সাট্টা প্রভৃতিতে আগ্রহী হয়। দাম্পত্য জীবনেও অনেক কঠিন পরিস্থিতির সন্মুখীন হতে হয়। এই ধরনের জাতক-জাতিকার অনেক শত্রু থাকে।

() কর্কট কালসর্প যোগ :  অষ্টমভাবে রাহু এবং দ্বিতীয়ভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সমস্ত গ্রহ রাহু-কেতুর ডানদিকে স্থিত হলে একে ‘কর্কট কালসর্প যোগ’ বলে। এই ধরনের জাতক-জাতিকা নিজের বন্ধুদের দ্বারা প্রতারিত হয়। কাজে স্থিরতা আসে না। জাতকের স্বভাব অন্তর্মুখি হয়। যেকোনো কারণে ঝগড়ার প্রবৃত্তি থাকে।

() শঙ্খচূড় কালসর্প যোগ :  নবমভাবে রাহু, তৃতীয়ভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সব গ্রহ রাহু-কেতুর ডানদিকে স্থিত হলে এই ধরনের যোগকে ‘শঙ্খচূড় কালসর্প যোগ’ বলে। এই ধরনের জাতক-জাতিকর কোনো গুণ না থাকলেও বড় বড় কথা বলে। সব কাজে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েও কাজে সাফল্য পায় না। জাতক-জাতিকার জীবনে উত্থান পতন দেখা যায়।

(১০) ঘাতক কালসর্প  যোগ :  দশমভাবে রাহু, চতুর্থভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সমস্ত গ্রহ রাহু-কেতুর ওপরের দিকে স্থিত হলে এই ধরনের যোগকে ‘ঘাতক কালসর্প যোগ’ বলে। এরকম জাতক-জাতিকা সরকারী পক্ষ থেকে বাধা পায়। পরিবারেও এরা প্রতিষ্ঠা পায় না। কখনো রাজা, কখনো ফকিরের মতো জীবন যাপন করেন। সিংহ কিংবা কন্যা লগ্ন হলে এবং অন্যান্য গ্রহের স্থিতি ভালো হলে জীবনে বহু ভালো পদ এবং সম্মান প্রতিষ্ঠা পায়।

(১১) বিষধর কালসর্প যোগ :  একাদশভাবে রাহু এবং পঞ্চভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সমস্ত গ্রহ রাহু-কেতুর ওপরের দিকে স্থিত হলে এই ধরনের যোগকে ‘বিষধর কালসর্প যোগ’ বলে। এই যোগের প্রভাবে জাতক-জাতিকা একস্থান থেকে আর এক স্থানে ঘুরে বেড়াতে থাকে। সন্তানের দ্বারা দুঃখ প্রাপ্তি ঘটে। অনিদ্রায় ভুগতে হয়। ৪১ বছর পর জীবনে স্থায়ীত্ব আসে।

(১২) শেষনাগ কালসর্প যোগ :    দ্বাদশভাবে রাহু এবং ষষ্ঠভাবে কেতু অবস্থান করলে এবং বাকি সমস্ত গ্রহ রাহু-কেতুর বাঁদিকে স্থিত হলে এই ধরনের যোগকে ‘শেষনাক কালসর্প যোগ’ বলে। এরকম জাতক-জাতিকার অকারণে শত্রু বৃদ্ধি ঘটে। এই শত্রুরাই তার ক্ষতি করতে সচেষ্ট থাকে। লড়াই, ঝগড়া, মোকর্দমাতে পরাজয়ের সন্মুখীন হয়। পেটের সমস্যায় ভুগতে হয়।

    কালসর্প যোগের বিষয়ে অনেক বিভ্রান্তি আছে। এক্ষেত্রে একটি সাধারণ ধারণা হল, এই যে কালসর্পযোগ সর্বদা খারাপ ফল দেয়। কিন্তু তা নয়, আর একটি সাধারণ ধারণা এই যে কালসর্প যোগ থাকলে জন্মকুষ্ঠীর আর সমস্ত গ্রহ নিষ্প্রভ হয়ে যায় (এই গ্রহ নিজের উচ্চরাশিতে বিদ্যমান হলেও) কিন্তু তা নয়।

    এরকমও দেখা যায় যে, কেন্দ্র স্থানে কালসর্প যোগ অশুভ ফল দিলেও অন্য স্থানের কালসর্প যোগ শুভ ফলদায়ক হয়েছে। কালসর্পযোগীদের ক্ষেত্রে কেতুর দশা, অন্তর্দশা, গোচরে কেতুর ৪-৮-১২ স্থানে ভ্রমণ বিশেষভাবে কষ্টদায়ক হয়ে থাকে। অনুভবের উপর নির্ভর করে এমনও দেখা গেছে যে কালসর্প যোগে রাহু যে ঘরে বসে আছে, ওই ঘরে ক্ষতি হয়।

    কালসর্পযোগের দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের জীবন স্বাভাবিক হয় না। এই যোগে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিরা সারা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হন। তারা কর্মঠ, উচ্চাকাঙ্খী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীনের সম্পূর্ণ লক্ষ্যে পৌঁছতে সফল হয়। জাতক-জাতিকার জন্ম পত্রিকায় কালসর্পযোগ থাকা সত্ত্বেও মহাদশা, অর্ন্তদশা শুভ ফলদায়ী হলে জাতক-জাতিকার জীবনে বহু সংঘের্ষর পরে ভালভাবেই কেটে যায়। অনুকূল দশা বা অর্ন্তদশায় জাতক-জাতিকা নিজ ক্ষেত্রে অদ্বিতীয় প্রতিভাসম্পন্ন হয়। কিন্তু এর পতনও দেখা যায়। এই যোগের দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের মানসিক স্তর সাধারণ মানুষের থেকে উচ্চ হয়। কিন্তু জাতক-জাতিকা তার এই গুণের শুভ প্রয়োগ করবে না অশুভ প্রয়োগ করবে তা ভেবে দেখার বিষয়।

পরিহার :  কিছু আচাের্যর মতে যদি জন্মকুন্ডলীতে কালসর্প যোগ থাকে এবং পত্নী অথবা পতির জন্ম জ্যেষ্ঠা অথবা মূলা অথবা অশ্লেষা নক্ষত্রতে হয়, তবে কালসর্প যোগ অনেকটা হ্রাস পায়।

    রাহু তৃতীয়, ষষ্ঠ, একাদশ ভাবে থেকে কালসর্প যোগ সৃষ্টি করলে এই যোগের ফল কমে যায়। অতএব এরকম পরিস্থিতিতে কালসর্প যোগকে উপেক্ষা করা যেতে পারে।

    জন্মকুন্ডলিতে কালসর্প যোগ আছে কিন্তু এই জন্মকুন্ডলিতে যদি স্থান পরিবর্তনের যোগ থাকে, তবে কালসর্পযোগের জোর কমে যায়। (ওই স্থান পরিবর্তন যোগ যেকোনো শ্রেণীতেই আসুক না কেন, শুধু বৃশ্চিক লগ্নে ৬শ ৮মশ স্থান পরিবর্তন যোগকে বাদ দিয়ে)

প্রতিকার : কালসর্প যোগের পরিহারের উপায় কোনও প্রাচীন গ্রন্থে পাওয়া যায় না এবং কোনও দেবতার পূজারও বিধান নেই। যোগে (ধ্যানে)গণকে দেবতা মনে করে নাগের পূজা করা হয়। মহামৃতু্যঞ্জয়-এর জপ এবং শিবের আরাধনাই সর্বশ্রেষ্ঠ উপায়।

       এই যোগের মন্ত্রে প্রতিষ্ঠা করে প্রতিদিন পূজা করা হয়। ‘‘ওঁ নাগেশ্বরায়ে নমঃ) ‘ওঁ মহাকালায় নমঃ’ জপ করতে হয়। যদি প্রমাণিত প্রতিকারের প্রয়োজন হয় তবে সিদ্ধ গুরু দ্বারা ‘কালসর্প সিদ্ধ যন্ত্রম্‌’ ধারণে অবশ্যই শুভফল লাভ হয়ে থাকে।

    যদি সম্ভব হয়, তাহলে কালসর্প যোগীদের সূর্য এবং চন্দ্র গ্রহণের দিন, গ্রহণের সময়, বিশেষ তিথিতে রুদ্রাভিষেক করানো প্রয়োজন। এতে কালসর্পযোগের শান্তি হবে। এবং জীবনে বাধা দূর হয়ে সমস্যার সমাধান অবশ্যই হওয়া সম্ভব। রুদ্রাভিষেকের সময় অন্যান্য পূজা সামগ্রী ছাড়া একটা নাগ-নাগিনীর জোড়া অভিষেকের শুরুতে শঙ্কর ভগবানের সামনে রাখতে হবে এবং অভিষেক পূর্ণ হলে ওই নাগ-নাগিনীকে আগে থেকেই তামার পাত্রে মধু ভরে তাকে বিসর্জন করতে হবে এবং তামার পাত্রে নাগ-নাগিনী সমেত ওই পুরোহিতকে দিয়ে দিতে হবে। যাকে দিয়ে অভিষেক করানো হয়েছে। এটি কালসর্পযোগ শান্তির এক বিকল্প প্রোয়োগ।

কালসর্পযোগের শাস্ত্রীয় বিধিসম্মত প্রতিকার সাধারণত ‘ত্রম্বকেশ্বর মন্দির’-এর শুদ্ধভাবে করা হয়ে থাকে।

সুতরাং ভক্তগণ আপনারা বুঝতে পারলেন যে ‘কালসর্প যোগ’ থাকলে আমাদের জীবনে কী কী ফল প্রদান করে। যদি আমাদের জন্মকুন্ডলীতে ‘কালসর্প যোগ’ থাকে তাহলে আমাদের ভালো জ্যোতিষীকে দেখিয়ে সেটাকে খন্ডন বা কাটানো হয়ে থাকে এবং এর ফলে আমাদের জীবন সঠিক দিশাতে চলতে থাকে। আমাদের জীবন সুন্দর ও ভালোভাবে বাঁচতে সাহায্য করে।

‘ওঁ শান্তি, ওঁ শান্তি, ওঁ শান্তি’

সমাপ্ত

Loading