চিকিৎসা বিজ্ঞানে রুদ্রাক্ষের টুকিটাকি
অধ্যাপক ডঃ কুন্তল কুমার মুখোটী
জ্যোতিষ মহামহোপাধ্যায়, জ্যোতিষ সম্রাট ও জ্যোতিষ গুরু (স্বর্ণপদক প্রাপ্ত)
Ph.D In Astrology (সনাতন ও K.P)
Ph.D (ongoing) in Vastu Shastra
জ্যোতিষবিদ্ (কোষ্ঠী বিচার ও কোষ্ঠী তৈরী), হস্তরেখাবিদ্, বাস্তুবিদ্ ও সংখ্যাতত্ত্ববিদ্।
যোগাযোগ – 9123090393/8017686476/9038837027
ইমেল – dr.saikuntal@gmail.com / dr.kuntalastro 2021@gmail.com
চেম্বার : নাগেরবাজার (নিজ বাসগৃহ), স্নেহা জেমস্ হাউস – দমদম ও
গড়িয়াহাট, মা বগলা জুয়েলার্স – বাগুইহাটি / তেঘরিয়া সংযোগস্থলে। সোনারী ইষ্ট, জামশেদপুর।
আমাদের জীবন নানা ঘাত-প্রতিঘাত, জ্বরাব্যধি, দ্বন্দ্ব, শোক, সমস্যার মধ্যে অতিবাহিত হয়। আমরা এইসব সমস্যার কারণ খোঁজার চেষ্টা করি না, সমস্যার সমাধান চাই মাত্র । এর ফলে সমস্যা পুনরায় আমাদের জীবনকে দুির্বষহ করে তোলে। এইসব সমস্যার কারণ ও সমাধানের বিষয়গুলি নিয়েই ধারাবাহিক ভাবে কলম ধরেছেন অধ্যাপক ডঃ কুন্তল কুমার মুখোটী।
রুদ্রাক্ষ কল্পবৃক্ষতুল্য। ভগবান শিবের অক্ষজাত এই ফলটিকে দিব্য শক্তি সম্পন্ন বলে মনে করা হয়। পুরাকালে ঋষিগণের মতে ভিন্ন ভিন্ন রুদ্রক্ষের ভিন্ন ভিন্ন দেবতার অবস্থান। আয়ুর্বেদ গ্রন্থে রুদ্রাক্ষকে মহৌষধি অথবা দিবৌষধী হিসাবে রুদ্রাক্ষের গুণাগুণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। শিবপুরাণে রুদ্রাক্ষ ধারণকারীকে শিবতুল্য হিসাবে মনে করা হয়। স্কন্ধপুরাণে ও লিঙ্গপুরাণে রুদ্রাক্ষকে আত্মবিশ্বাস ও মনোবল বৃদ্ধিকারক হিসাবে মনে করা হয়। রুদ্রাক্ষ পাপনাশক, কর্মসফলতা, সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করে। প্রাচীন গ্রন্থ ও সাহিত্যে রুদ্রাক্ষের বহু গুণাগুণ বর্ণিত আছে। রুদ্রাক্ষ নিয়ে প্রাচীনকাল থেকে আধুনিককাল পর্যন্ত গবেষণা চলে আসছে। এই গবেষণার মধ্য দিয়ে আজ প্রমাণিত যে রুদ্রাক্ষের মধ্যে বৈদ্যুতিক ও চৌম্বকীয় আবেশ বর্তমান। মেরুপ্রবণতা এবং চুম্বকীয় ক্ষেত্রের আবেশ অনুসারে রুদ্রাক্ষ বৈদ্যুতিক এবং চৌম্পকীয় আবেশজনিত স্পন্দনকে বিপরীত মেরু এবং আবেশের দিকে প্রবাহিত করে। পৃথিবীতে রুদ্রাক্ষই একমাত্র ভেষজ যার মধ্যে তড়িৎ চৌম্বকীয় শক্তি বিদ্যমান। মানুষের শরীরের মধ্যেও তড়িৎ চৌম্বকীয় ক্ষেত্র বর্তমান। সেই কারণে রুদ্রাক্ষ ধারণে রুদ্রাক্ষের তড়িৎ চৌম্বকীয় প্রভাব ধারণকারীর তড়িৎ চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের ওপর ক্রীয়া করে। রুদ্রাক্ষ সূর্যরশ্মিকে শোষণ করে এবং নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিকিরণ করে মস্তিষ্ক, স্নায়ু, হৃদযন্ত্র, যকৃত ইত্যাদি অর্থাৎ মানব শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করে। রুদ্রাক্ষ মানুষের ষড়রিপু, (কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ্ ও মাৎসর্য) কে নিয়ন্ত্রণ করে।
মানুষের শরীরে তিনটি বিশেষ উপাদান বায়ু, পিত্ত ও কফের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে রুদ্রাক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, অবসাদ, হৃদরোগ, স্নায়ুর রোগ, দেহের অবসাদ, মৃগী, মাইগ্রেন, রক্তচাপ, হাইপারটেনশন, অস্থিরতা, হীনমন্যতা, ভীরুতা, মনের চঞ্চলতা দূর করে একাগ্রতা বৃদ্ধি, ভয় থেকে মুক্তি, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, ঋণাত্মক শক্তি থেকে মুক্তি, চেতনার বৃদ্ধিতে রুদ্রাক্ষের ভূমিকা অপরিসীম।
-
ষটচক্র শোধনে, কুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করতে রুদ্রাক্ষ সাহায্য করে।
-
মোবাইল (এনড্রয়েড) ফোন বা ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম থেকে বেরিয়ে আসা তড়িৎ চৌম্পকীয় বিকিরণের কুপ্রভাবকে রুদ্রাক্ষ তার জৈব চৌম্বকীয় ধর্মের দ্বারা প্রতিরোধ করে।
-
রুদ্রাক্ষের জৈব বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় ধর্ম ও ভেষজগুণ, মানুষের মানসিক ও শারীরিক শক্তির ধনাত্মক বিকাশ ঘটানোর ফলে মানুষের বার্ধক্য প্রতিরোধ করে।
-
৫-৭ ঘন্টা গরম দুধে ডুবিয়ে রুদ্রাক্ষকে, সেই দুধ পান করলে শ্বাসকষ্ট উপশম হয়, স্মরণশক্তি বাড়ে।
-
৫ মুখী রুদ্রাক্ষকে সারা রাত জলে ভিজিয়ে সকালে উঠে সেই জল পান করলে উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
-
জাতক-জাতিকা নিজ জন্মছক অনুযায়ী নিির্দষ্ট রুদ্রাক্ষ ছাগলের দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে বাতজ ব্যথা কম হয়।
-
বড়ো রুদ্রাক্ষের বীজকে চন্দনের মতো গুঁড়ো করে বিষাক্ত ঘায়ের ওপর লাগালে আরোগ্য লাভ হয়।
-
রুদ্রাক্ষের মিশ্রণ নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় দিলে চুল পড়া বন্ধ হয়।
-
রুদ্রাক্ষ ও নিমপাতার মিশ্রণ চুলকানির স্থানে লাগালে চুলকানি কম হয়।
-
রুদ্রাক্ষ চন্দনের মতো গুড়ো করে প্রলেপ লাগালে ঘামাচি দূর হয়।
-
১০ মুখী রুদ্রাক্ষ বেঁটে আমলকীর রসের সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় মাথায় অর্থাৎ চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করলে পাকা চুল কালো হয়।
-
৯ মুখী মিশ্রণের সঙ্গে কর্পূর মিশিয়ে প্রতিদিন গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে গ্রহণ করলে, প্রস্রাবের জ্বালা দূর হয়।
-
রুদ্রাক্ষ, শ্বেতচন্দন, কর্পূর, সমান পরিমাণে পিষে সরষের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে শরীরে লাগালে শরীরের দুর্গন্ধ দূর হয়।
-
রুদ্রাক্ষ, বটপাতা, তেতুলপাতা, রক্তচন্দন, সব একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগালে ব্রণ থেকে বা মুখের যেকোনো দাগ নির্মূল হয়।
-
কালো রঙের রুদ্রাক্ষ কোমরে ধারণ করলে মেয়েদের গর্ভপাতের সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ হয়।
চিকিৎসাবিদ্যায় রুদ্রাক্ষের আরো অনেক ছোট ছোট দৈনন্দিন প্রয়োগ মানবজীবনের জীবনশৈলীকে পরিবর্তন করেছে।