সঞ্জীব দত্ত, দেগঙ্গা- ১৮৬১ সালে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেনন। তাঁর মায়ের নাম-সারদা দেবী,পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর অসাধারণ ছোট ছোট গল্প কবিতা রচনার সামগ্রী দিয়ে, আমাদেরকে যে  উপহার তিনি দিয়েগেছেন তা সত্যিই  অনস্বীকার্য ও ভাবাবেগের সৃষ্টি করে।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

তরুণ প্রজন্ম তাঁর লেখনীর মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে অনেক সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে সহায়ক প্রতিপন্ন হয়। তিনি মৃত্যুঞ্জয়, দুই বিঘা জমি আরো কত সুন্দর সুন্দর লেখনি তিনি উপহার দিয়েগেছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট তেরোটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। এগুলি হল: বৌ-ঠাকুরাণীর হাট (১৮৮৩), রাজর্ষি (১৮৮৭), চোখের বালি (১৯০৩), নৌকাডুবি (১৯০৬), প্রজাপতির নির্বন্ধ (১৯০৮), গোরা (১৯১০), ঘরে বাইরে (১৯১৬), চতুরঙ্গ (১৯১৬), যোগাযোগ (১৯২৯), শেষের কবিতা (১৯২৯), দুই বোন (১৯৩৩), মালঞ্চ (১৯৩৪) ও চার অধ্যায় (১৯৩৪)। এছাড়াও তিনি অজস্র নাটক রচনা করেছিলেন যেমন নাটকগুলি হল:  শারদোৎসব (১৯০৮), রাজা (১৯১০), ডাকঘর (১৯১২), অচলায়তন (১৯১২), ফাল্গুনী (১৯১৬), মুক্তধারা (১৯২২), রক্তকরবী (১৯২৬), তাসের দেশ (১৯৩৩), কালের যাত্রা (১৯৩২) ইত্যাদি। এছাড়াও তাঁর কিছু বিখ্যাত ছোটগল্প কাবুলিওয়ালা পোস্টমাস্টার, দেনা পাওনা খুবই তাৎপর্য বহন করে। সাহিত্যে ১৯১৩ সালে তিনি “গীতাঞ্জলি “কাব্যগ্রন্থের জন্য “নোবেল পুরস্কার ” পেয়ে ভারতবর্ষকে বিশ্বের দরবারে সমৃদ্ধশালী করে তুলেছিলেন।

এই মহান মনীষীর জীবনী,তরুণ প্রজন্মকে উত্সাহিত করে, তার অজস্র কাব্য ধারার সংগীত রচনা আজ বাঙালি মানুষের হৃদয়ের স্থান করে নিয়েছে, তাঁর জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে, গানটি ভারতবর্ষের জাতীয় সংগীত হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তিনি শুধু ভারতবর্ষের নন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তাঁর লেখনি থেকেই পাঠ করা হয়।

তিনি একজন যুগশ্রেষ্ঠ সংস্কারক সাহিত্যিক দার্শনিক ছিলেন, একজন রাষ্ট্রবিদ্ ছিলেন। তিনি ভারত বর্ষ কে মানব সাগরের তীর বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ বলেও আখ্যায়িত করেছিলেন,তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের তরে সকলে, নিবেদিতপ্রাণ বলে উল্লেখ করেছিলেন।

তিনি জাতিভেদ প্রথা, ধর্মীয় অন্ধতা কুসংস্কার বিচ্ছিন্নতা কে পরিহার করতে বলেছিলেন,তিনি যেমন “জাতীয়তাবাদী”ছিলেন, তেমনি তিনি আন্তর্জাতিকতাবাদেও বিশ্বাসী ছিলেন তিনি নিজেকে “বিশ্বনাগরিক” বলেই ভাববেন। তাঁর লেখা “চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য উচ্চ যেথা শির” এই কবিতাটির মাধ্যমে তার আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রকাশ ঘটেছে তিনি পৃথিবীর যে সমস্ত সংকীর্ণ যে ভৌগোলিক দেশের সীমারেখা তা খন্ডন করে বিলীন করে মানুষের একত্রীকরণের কথা বলেছেন, সমাজতান্ত্রিক উন্নয়নের কথা বলেছেন। এই মহান মনীষীর জীবনাবসান ঘটে ১৯৪১ সালে।,

Loading