অধিক ব্যয় ও ঋণভার এবং তার প্রতিকার

বিশ্ববাংলা সেরা সম্মান ২০১৮, মাদার টেরেজা স্মারক সম্মান ২০১৮,

 বঙ্গরত্ন গৌরব সম্মান ২০১৮ দ্বারা অলংকৃত

আচার্য্য শিবু শাস্ত্রী

আচার্য্য, শাস্ত্রী, প্রাক শাস্ত্রী, রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত সংস্থানম

(ভারত সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক দ্বারা পরিচালিত)

জ্যোতিষ ভারতী, জ্যোতিষ শাস্ত্রী, জ্যোতিষ আচার্য, তান্ত্রিকাচার্য্য,

জ্যোতিষ এশিয়াশ্রী উপাধি প্রাপ্ত (স্বর্ণপদক প্রাপ্ত)

যোগাযোগ – ৯৮৩০২৯২১৭৪

Email : acharyashibusastri@gmail.com

ঋণ মানুষের জীবনে একটা বিভীষিকা স্বরূপ। এই জালে একবার জড়ালে  সেই জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা খুবই অসাধ্য হয়ে পড়ে। এমনও দেখা যায়, যে ব্যক্তি ঋণ করেছেন তিনি তার জীবদ্দশায় ঋণের সুদ গুণতে গুণতে ইহলোক ত্যাগ করেছে তাও তার ঋণ তিনি শোধ করে যেতে পারেননি। তার পরবর্তী প্রজন্মকেও সেই ঋণভার বহন করে যেতে হয়। অধিক ব্যয়ের নেশাতেও কিন্তু অনেকের ঋণ হয়ে যায়। এই অধিক ব্যয়ের নেশাও বি হ্র হয়ে থাকে গ্রহগত কারণে। মানুষের জীবনে যাই কিছু ঘটুক না কেন তার পিছনে কিন্তু কিছু না কিছু গ্রহগত কারণ থাকেই। তাই যারা জ্যোতিষ শাস্ত্র চর্চ্চা করেন তারা ব্যক্তির জাতচক্র দেখেই বলে দিতে পারেন সেই জাতকের কতটা ঋণ এবং কতটা ব্যয়যোগ আছে। ঋণ যোগ বিষয়টি জাতচক্রে বিচার হয় অষ্টমভাবস্থ  গ্রহ ও তার বলাবল এবং অন্যান্য গ্রহদের সাথে সম্বন্ধ থেকে। আর ব্যয়ভাবে বিচার হয় দ্বাদশভাবস্থ গ্রহ এবং ব্যয়পতির অবস্থান থেকে। উদাহরণ স্বরূপ কয়েকটি ভাব এবং গ্রহদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও অবস্থায় দেখলেই বিষয়টি বোঝা যায়।

সূত্র ১ – জাতকের জাতচক্রে পুত্রভাব, রিপুভাব, নিধনভাব ও ব্যয় ভাবের সাথে যদি নিধনভাবের মূল নিয়ন্ত্রণ কারক গ্রহের সম্বন্ধ থাকে সেই ব্যক্তি অতি সহজেই ঋণের দ্বারা অর্থলাভ করতে সক্ষম হবে কিন্তু তার জীবদ্দশায় সেই ঋণ সে শোধ করে যেতে পারবে না। সারা জীবন শুধু ঋণের সুদই গুণে যাবে।

সূত্র ২ – পুত্রভাব, রিপুভাব এবং ব্যয়ভাবের সাথে যদি নিধনভাবের মূল নিয়ষ্ণু কারক গ্রহের সম্বন্ধ থাকে তবে সেই ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় ঋণ শোধ করে যেয়ে পারে না।

সূত্র ৩ – শনি যদি ব্যয়ভাবের মূল নিয়ন্ত্রণ কারক গ্রহ হয় তবে জাতকের ঋণ শোধ হয় কিন্তু প্রচুর দেরিতে। ততদিন তাকে সুদ দিয়ে যেতে হয়। ব্যয়ভাবের নিয়ন্ত্রণ কারক গ্রহ যদি বক্রী হয় তবে সেই ব্যক্তির ঋণ শোধ হয় না।

সূত্র ৪-শুক্র এবং রাহু যুক্ত হয়ে যদি ব্যয়ভাবে অবস্থান করে তবে জাতকের জীবনে ঋণ শোধ হয় না।

সূত্র ৫ – জাতচক্রে মঙ্গল যদি ব্যয়ভাবে অবস্থান করে তবে জাতকের অধিক ব্যয়যোগের কারণে ধনহানি ঘটে।

এখানে কয়েকটি মাত্র সূত্র দেওয়া হল। এরূপ বহু যোগ, সম্বন্ধ, দৃষ্টি ইত্যাদি জাতচক্রে থাকে যার থেকে ঋণ এবং বায় উভয়েই সৃষ্টি হয়। কাজেই একটা বিষয় স্পষ্ট যে জাতকের জীবনে এই যোগের সৃষ্টি হয় গ্রহগত কারণেই। তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে এত কিছু বোঝা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। তাই জীবন এরূপ কোনো সমস্যায় পড়লে তারা দিশাহারা হয়ে যায়। তখন এর থেকে শুধু মুক্তির পথ খুঁজে বেড়াতে থাকে। প্রতিকারের জন্য বহু টাকা হয়ত পুনরায় ধার করে খরচও করে থাকে কিন্তু তাতে হয়ত কখনও ফল পাওয়া যায় আবার কখনও  কিছুই লাভ হয় না। তাই কিছু সাধারণ প্রতিকারের কথা এখানে উল্লেখ করা হলে ১ যেগুলি প্রয়োগের দ্বারা বা পালন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে এ ঋণ একবার করলে সেই ঋণ কোনো না কোনোদিন শোধ করতেই হয় কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে তা শোধ করতে চাইলেও তা হয়ে ওঠে না। তাই যাতে গ্রহ বিরূপতা কেটে তা সম্ভব হয় তারই চেষ্টা করা হলো এই প্রতিকারগুলির মাধ্যমে। আশা করি এগুলির যথাযথ পালনে লাভবান হওয়া সম্ভব হবে।

এখানে উল্লেখিত প্রতিকারগুলির কিছু কিছু বিভিন্ন শাস্ত্র হতে সংকলিত এবং কিছু আমার গুরুমুখী বিদ্যায় প্রাপ্ত। এদের মধ্যে কিছু প্রতিকারের প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া গেছে যেগুলির প্রয়োগে অনেকেই লাভবান হয়েছেন। স্থায়ী প্রতিকার—

১। একটি তামার পাতে প্রথমে এখানে দেওয়া যন্ত্রটি এঁকে নিতে হবে। এরপর যেকোনো মঙ্গলবার ওই যন্ত্র বিধি সম্মতভাবে পূজা পাঠ করে গৃহে স্থাপন করতে হবে। স্থাপনের দিন অবশ্যই নিরামিষ আহার করা প্রয়োজন। নিরামিষ আহারের অর্থ ময়দা দিয়ে প্রস্তুত কোনো খাবার, কোনো তরল জাতীয় পানীয়, মিষ্টান্ন দ্রব্য ইত্যাদি। তবে শুধু স্থাপন করে রাখলেই চলবে না। প্রতি মঙ্গলবার ধূপ, ধুনা দিয়ে এর পূজা পাঠ করা প্রয়োজন। পূজা অর্থাৎ নিজে যেভাবে পারবেন সেভাবেই করবেন। সকালে স্নান করে কিছু পীত পুষ্প যন্ত্রের উপরে দিয়ে ধূপ ও দীপ দেখাবেন এবং সবশেষে ঋণ মুক্তির কামনা করে প্রণাম করবেন। এর সাথে ঋণমোচক মঙ্গলস্তোত্রম্ পাঠ করা আবশ্যক। যদি ভক্তি সহকারে এই ক্রিয়া করে যেতে পারেন তবে একটা পথ অবশ্যই পেয়ে যাবেন। যন্ত্রর ছবি নীল প্রতিকার পুস্তক পাবেন।

২। মঙ্গলবার সকালে স্নান করে হলুদ বস্ত্র ধারণ করে হলুদ আসনে বসবেন। এবার কাঁচা হলুদ ঢাকা চাকা করে কেটে ১০৮টি টুকরো করে নিয়ে হলুদ সুতোয় এগুলি মালা আকারে গেঁথে নিয়ে ঐ আসনেই পূর্ব দিকে মুখ করে বসে সম্মুখে একটি নীল তারা মাঙ্গলিক গন্ধযুক্ত ধূপ জ্বালিয়ে ‘ওঁ বগলামুখ্যৈ বিস্মহে দ্বিভূজায়ৈ ধীমহি, তন্নো দেবী প্রচোদয়াৎ’ এই মন্ত্র ১০৮ বার জপ করতে হবে। একবার এই মন্ত্রটি জপ হলে র একটি হলুদ আঙুলে করে সরিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ যেভাবে মালা জপ করা হয় ও সেই একই পদ্ধতিতে এই ক্রিয়া করণীয়। পুরো মালার সব হলুদ শেষ হলে তবেই ১০৮ বার জপ হবে। জপের শেষে মা বগলামুখীর উদ্দেশ্যে প্রণাম করে তার কাছে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার কামনা জানিয়ে তবেই আসন থেকে ওঠা যাবে।এই ক্রিয়া একাধিক্রমে ২৮টি মঙ্গলবার করা প্রয়োজন। এই জপ যদি একাগ্রচিতে ভক্তিভরে করা যায় তবে সুফল লাভ করা সম্ভবপর।

৩। যেকোন মঙ্গলবার হনুমান মন্দিরে এক পাতা মেটে সিঁদুর ও ১০০ গ্রাম বাতাসা ও এক প্যাকেট নীল তারা মাঙ্গলিক ধূপ দিয়ে আসতে হবে। ঘরে এসে তাবশ্যহ, হনুম ধ্যান ও হনুমৎ স্তোত্রম্ পাঠ করা প্রয়োজন। এভাবে যত বেশী সংখ্যক মঙ্গলবারে এই ক্রিয়া করতে পারা যায় তত দ্রুত ফল লাভ হয় ও গ্রহ বিরূপতা প্রশমিত হয় ৪। প্রতি সোমবার ৫টি আকন্দ ফুল, গরুর কিছুটা কাচা দুধ এবং অল্প মধু একত্রে  নিয়ে পারদ শিবলিঙ্গের মাথায় ও পারদেশ্বরায় শিবায় নমঃ’ এই মন্ত্র পাঠ করে অর্পণ করলে গ্রহদোষকে প্রশমিত করা যায়। এভাবে ১৯টি সোমবার পর পর করছে এই সমস্যা থেকে মুক্তি লাভের পথ পাওয়া সম্ভব হবে এবং ঋণমুক্তিও ঘটবে।

৫। কোন শুভ তিথি যুক্ত মঙ্গলবারে একটি ২ ইঞ্চি পরিমাণ অনন্তমূল নিয়ে তারে ২ ঘন্টা হলুদ জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর এটিকে জল থেকে তুলে নিয়ে লাল কার দ্বারা কোন দেবমন্দিরে দাঁড়িয়ে গলায় অথবা হাতে ধারণ করতে হবে। এরপর ঘরে এসে ঋণমুক্তি স্তোত্রম পাঠ ক প্রয়োজন। স্তোত্র পাঠ হয়ে গেলে কোনো ফাঁকা জায়গায় গিয়ে কিছু দ্বারা আগুন জ্বালিয়ে তার মধে অল্প সাদা সরষে এবং কিছুটা ধুনা মিশ্রিত করে মুক্তির আর্জি জানিয়ে আটবার পোড়াতে হলে ধারণের দিন অবশ্যই কিছু মিষ্ট দ্রব্য দান কর উচিত। মূলটি একই পদ্ধতিতে পনের দিন পর পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এর ফলে সুফল করা সম্ভবপর হবে।

৬। প্রতি সোমবার ৯টি আকন্দ ফুল, অল্প গাওয়া ঘি এবং অল্প মধু একত্রে পারদ শিবলিঙ্গের মাথায় ‘ওঁশিবায় নমঃ’ এই মন্ত্র পাঠ করে করলে গ্রহদোষকে প্রশমিত করা যায়। এভাবে ৯টি সোমবার পর পর করনে গ্রহের কারণে ঋণ সেই গ্রহদোষ প্রশমিত হয়ে থাকে। ৭। গ্রহদোষের কারণে অতিরিক্ত ব্যয় সমস্যা এসে উপস্থিত হলে প্রতি সকালে স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে কম্বলের আসনে বসে একটানা ৮৭ দিন ‘শ্রীশ্রী চণ্ডী প্রাতঃস্মরণ স্তোত্রম’ পাঠ করলে অতিশয় শুভ ফল লাভ করা যায়। এই স্তোত্র মনে মনে পাঠ করা নিষেধ। উচ্চস্বরে পাঠ করাই বিধি। এই ক্রিয়া যত ভোরে সম্ভব করা প্রয়োজন।

৮। যেকোনো মঙ্গলবার থেকে এই ক্রিয়া শুরু করে একাদিক্রমে ১৯টি মঙ্গলবার এটি পালন করণীয়। একটি অশ্বত্থ পাতা এনে তাকে প্রথমেই ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। এবার ওই পাতার উপরে লাল সিঁদুর দিয়ে ‘ওঁ হুং শ্রীং মঙ্গলায়, ঋণমোচনায় স্বাহা’ এই মন্ত্রটি লিখে তার উপরে ৯টি হলুদ চাপা / গাঁদা ফুল দিয়ে ওই অশ্বত্থ গাছের নিচে রেখে আসতে হবে। এই ক্রিয়া যত সকালে সম্ভব করতে পারলে উত্তম। এটি রাখার সময় ঋণ থেকে যাতে মুক্ত হতে পারেন তার কামনা করবেন। বৃক্ষদেবকে প্রণাম করে ফিরে আসার সময় পিছন ফিরে তাকাবেন না। ঘরে ফিরে এসে ঋণমোচক মঙ্গল স্তোত্র পাঠ করা একান্ত প্রয়োজন। এভাবে ১৯টি মঙ্গলবার করলে অধিক অর্থ ব্যয় এবং ঋণ যোগ প্রশমিত করা সম্ভবপর হয়ে থাকে।

৯। যদি ঋণের জন্য অতিরিক্ত সমস্যার সৃষ্টি হয় তবে যথাযথ বিধি সম্মত উপায়ে মা বগলার পূজা ও কবচরাজের পূজা, হোম-যজ্ঞ ইত্যাদি করে কোন শুভ তিথিতে বা গুরু নির্দেশিত তিথিতে ‘বগলামুখী কবচ্’ প্রস্তুত করিয়ে ধারণ করতে পারেন। যদি অমাবস্যা তিথিতে প্রস্তুত করান তাহলে উত্তম নতুবা মঙ্গলবার পড়বে এমন কোন শুভ তিথিতে করলে ভাল হয়। তবে কবচ্ শুধু ধারণ করলেই হবে না। অতি নিয়ম নিষ্ঠার সাথে একে রক্ষা করা প্রয়োজন যাতে কবচ্চ্‌ কোনরূপ ভাবে অশুদ্ধ না হয়।

১০। যদি ব্যয়ের অতিরিক্ত চাপে দিশাহারা হতে হয় এবং দরিদ্র অবস্থায় পড়তে হয় তবে তাকে প্রশমিত করার জন্য প্রতি মঙ্গলবার ‘দারিদ্র্যদহণ স্তোত্রম্’ পাঠ করা অত্যন্ত লাভদায়ক হয়। সকালে স্নানের পরে লাল কম্বলের আসনে বসে এই স্তোত্রম্ পাঠ করা শুভপ্রদ।

১১। যেকোন শুভ তিথিযুক্ত মঙ্গলবারে একটি ধাতুর তৈরী মঙ্গল যন্ত্র পূজা, হোম যজ্ঞ ইত্যাদি করে গৃহে স্থাপন করলে ঋণদোষ ও ব্যয়যোগ প্রশমিত করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে গৃহে স্থাপিত করার পরে প্রতি মঙ্গলবার সাধক ওই যন্ত্রকে ধূপ-দীপ দেখাবেন ও নিজের মনোস্কামনা জানিয়ে ১০৮ বার মঙ্গলগ্রহের মন্ত্র ‘হুং শ্রীং মঙ্গলায়’ জপ করবেন।

১২। কোনো জাতক-জাতিকা যদি ঋণ দোয ও অধিক ব্যয়ের কারণে অতিরিঙ কষ্ট পেতে থাকেন তবে প্রতি শনিবার এবং মঙ্গলবার সকালে স্নান করে শুদ্ধ বস্তু পরিধান করে ‘নবগ্রহপীড়াহর স্তোত্রম’ পাঠ করলে এই ধরনের কষ্ট দূরীভূত হয়ে পারে এবং জাতক বা জাতিকা শান্তিতে জীবন অতিবাহিত করতে পারেন।

১৩। যদি ঋণের কারণে বার বার তাগাদার সৃষ্টি হয় এবং বার বার অপমানিত হলে হয় তবে প্রতিকার হিসাবে এই ক্রিয়াটি করা যেতে পারে। কিছুটা লাল তামা এবং লোহা ও সীসা দ্বারা বালা তৈরী করিয়ে যেকোনো শনিবারে বালাটি সংস্কার ও শোধন পূর্বক ধারণ করলে এই নিগ্রহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। বালাটি ধারণ করার পরে প্রতি শনিবার দক্ষিণাকালী ধ্যান মন্ত্র বা দক্ষিণাকালী স্তোত্রম্ পাঠ করা প্রয়োজন।

১৪। ঋণ ও অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে যদি সংসারে প্রচুর অশান্তির সৃষ্টি হয় এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত হয় তবে যেকোনো শুভ তিথিযুক্ত মঙ্গলবার থেকে শুরু করে প্রতিদিন ‘গণেশাস্টক স্তোত্রম’ পাঠ করলে সমস্যা থেকে মুক্ত হয়ে সাংসারিক অশান্তি দূর হয়।

১৫। কালসর্প যোগের কারণে যদি ঋণ হয় তবে যেকোনো শনিবার বা মঙ্গলবার সকালে স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্র ধারণ করে দেবস্থানে বসে একটি ভূর্জপত্রে কাল মসি দ্বারা নিচের মন্ত্র দুটি লিখে একটি মাদুলিতে ভরে মাদুলিটি শোধন পূর্বক লাল ও সাদা সুতো একত্র করে তার দ্বারা ধারণ করলে শুভ ফলপ্রাপ্তি ঘটে থাকে। ধারণের পর ‘ওঁ ঐং হ্রীং রাহবে’ ও ‘ওঁ হ্রীং ঐং কেতবে’ এই মন্ত্র দুটি ১০০৮ বার জপ করা প্রয়োজন। একদিনে জপ শেষ না হলে কয়েকদিন ধরে জপ করতে হবে।

১৬। ঋণের কারণে যদি কারও সাথে শত্রুতার সৃষ্টি হয় এবং মনে হয় যে সে ক্ষতি করতে পারে তবে নীচের স্তোত্রটি ১১০০০ জপ করলে শত্রুতার অবসান হয়ে সম্পর্কের উন্নতি হবে।

১৭। রুদ্রাক্ষ গলায় ধারণ করুন।

টোটকা দ্বারা প্রতিকার—

১। প্রতি সোমবার অশ্বথু গাছের গোড়ায় অল্প কাঁচা দুধ ও মধু একত্রে ঢাললে ঋণ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। ২। শনিবার শনিবার কালো তিল দ্বারা নির্মিত কোনো খাদ্যদ্রব্য দক্ষিণাকালী মন্দিরে পূজা দিলে এই দোষ থেকে মুক্তিলাভ করা সম্ভবপর।

৩। প্রতি মঙ্গলবারে পাঁচটি করে জবাফুল কোনো প্রবাহিত জলে ঋণ মুক্তির কামনা করে ভাসিয়ে দিলে এর থেকে মুক্তির পথ পাওয়া যায়। ৪। অমাবস্যা তিথিতে নীল রঙের নুতন বস্ত্র কোনো দরিদ্র ব্যক্তিকে দান করলে অধিক ব্যয় প্রশমিত করা যায়।

৫। সোমবার সোমবার একটি অশ্বথু পাতায় সাদা চন্দন দ্বারা ‘মম ঋণ মুক্তায় কুরু কুরু স্বাহা’ এই মন্ত্র লিখে প্রবাহিত জলে ভাসিয়ে দিলে উত্তম ফললাভ সম্ভব হয়। ৬। প্রতি মঙ্গলবার হবিষ্যান্ন গ্রহণ করতে পারলে এই দোষ থেকে মুক্তি লাভের পথ মেলে। ৭। প্রতি সোমবার শিবলিঙ্গের মাথায় একটি ত্রিপত্র যুক্ত বেলপাতা রেখে ঘি, মধু ও কাঁচা দুধ একত্রে মিশিয়ে অর্পণ করলে ঋণ শোধ হয়।

৮। প্রতিদিন স্নান করে বগলা স্তোত্রম্ পাঠ করলে অধিক ব্যয় ও ঋণভার লাঘব হয়।

৯। প্রতি অমাবস্যায় নীলতালা মায়ের পূজার হোমে আহুতি দিলে মুক্তির পথ অবশ্যই খুঁজে পাওয়া যায়

১০। প্রতিদিন দক্ষিণাকালী বং মহালক্ষ্মীর কবচ পাঠ করলে ধীরে ধীরে নানা কর্মযোগে ঋণ মুক্তির পথ পাওয়া যায়। কবচ পাঠের সময় নীল তারা মায়ের মাঙ্গলিক ধূপ অবশ্যই জ্বালাবন।

Loading